দৈনিকবার্তা -নিউজ : বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের খসড়া ফাঁসের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী-ছেলে, আইনজীবীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে৷ বুধবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ চার্জশিট দাখিল করে৷
যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ‘রায় ফাঁসের’ মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আইনজীবী ফখরুল ইসলাম, আইনজীবীর সহকারী মেহেদী হাসান, সাকা চৌধুরীর ব্যবস্থাপক মাহবুবুল আহসান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেন৷
প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, আসামিদের মধ্যে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ, ছেলে হুম্মাম ও মেহেদী পলাতক রয়েছেন৷ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শাহজাহান হোসেন তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ও ক্রোক পরোয়ানার আবেদন করেছেন৷ আইনজীবী ফখরুল ইসলামসহ তিনজন এ মামলায় কারাগারে আটক আছেন৷ এ মামলায় ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে৷
গত বছরের ১লা অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ তবে রায় ঘোষণার আগেই তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা রায়ের কপি ফাঁস করে দেন৷
পরবর্তীতে এ মামলায় গ্রেপ্তার ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন ও ফারুক রায়ের খসড়া ফাঁসের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন৷ তাঁদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০শএ নভেম্বর সেগুন বাগিচায় পাইওনিয়ার রোডের চেম্বার থেকে আইনজীবী ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ এ ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৭ এবং ৬৩ ধারায় শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়৷
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবীর এক সহকারী বড় অঙ্কের অর্থেল লোভ দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালের দুই কর্মীর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ বের করেন৷ ওই অংশটিই রায়ের দিন আদালতে সাংবাদিকদের দেখানো হয়৷
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকে পিটিশনের তারিখ নিতে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামের সহকারী ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলীকে একটি ‘পেনড্রাইভ’ দেন৷ তবে পেনড্রাইভে পিটিশনের সময় ছাড়াও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের ‘কম্পোজ’ করা কিছু অংশ চলে যায়৷
এরপর আইনজীবীর সহকারী নয়নকে রায়ের খসড়ার বাকি অংশ এনে দিতে চাপ দেয়৷ তা না দিলে রায়ের কম্পোজ করা অংশ নয়ন রায় ঘোষণার আগেই প্রকাশ করেছে বলে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেন তিনি৷অন্যদিকে রায়ের খসড়ার ওই অংশ এনে দিলে নয়নকে মোটা অঙ্কের বখশিস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আইনজীবীর সহকারী৷ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এরপর ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়নের সহযোগিতায় পেনড্রাইভে করে আইনজীবীর সহকারীকে রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ সরবরাহ করা হয়৷ এভাবেই রায়ের কিছু অংশ প্রকাশিত হয়ে যায়৷”