দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১৪ ডিসেম্বর: আমাদের গৌরবের মহান বিজয় দিবস স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্বের অবিস্মরণীয় একটি দিন, লাখো শহীদের রক্তস্নাত বিজয়ের দিন, পাকিসত্মানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের কুহেলিকা ভেদ করে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকিমিকি করে উঠেছিলো বাংলাদেশের শিশির ভেজা মাটি৷ অবসান হয়েছিলো পাকিসত্মানী শাসক গোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়৷ নারী, পুরম্নষ ও শিশু সবার চোখে ঠাঁই পেয়েছিলো সীমাহীন আনন্দের অশ্রম্ন৷ পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের এই সবুজ দেশে ৪৪ বছর আগে উদিত হয়েছিলো বিজয়ের লাল সূর্য৷ মুক্তি পাগল বাঙ্গালি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীনতাসূর্য ছিনিয়ে এনেছিলো৷ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ১৩দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এম.পি একথা বলেন৷
এছাড়া সভাপতির বক্তব্যে একাডেমীর মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী বলেন-বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাহেন্দ্রৰণ একদিনে আসেনি, এর পিছনে রয়েছে এ জাতির ঘাম ঝরানো সংগ্রাম৷ সেই সংগ্রামের মহান সেনাপতি হিসেবে উচ্চারিত হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম৷ বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা৷ তিনি আরো বলেন-ঔপনিবেশিক ইংরেজ শাসন আমলে বাঙ্গালি রক্ত দিয়েছে, লড়াই করেছে শোষণ-বঞ্চনার বিরম্নদ্ধে, সোয়াদুইশ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সংগ্রাম ও লড়াইয়ে রক্ত দিয়েছে বাঙ্গালি জাতি৷ ১৯৪৭ সালে পাকিসত্মান নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পিছনে ছিল বাঙ্গালির অবদান৷ শোষণ-বঞ্চনার বিরম্নদ্ধে ইংরেজদের বিতারিত করেছিলো যার জন্য, সেই একই রকমের শোষণ বঞ্চনার মুখোমুখি হয়ে পড়ে কয়েক বছরের মধ্যেই৷ শুরম্ন হয় সংগ্রাম, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ঐতিহাসিক ৬দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভু্যত্থান এসব ইতিহাসের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়৷ ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে শুরম্ন হয় নতুন অধ্যায়, ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ জাতির মনে বয়ে আনে অন্য এক প্রেরণা, জাগিয়ে তোলে মুক্তির উন্মাদনা৷ প্রায় ৯০ হাজার পাকিসত্মানী সেনা বাধ্য হয় রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে পরাজয় বরণ করতে৷ সেই আদর্শেই ১৯৭৪ সাল থেকে সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী৷ বঙ্গবন্ধুর হাতে তৈরী এই সাংস্কৃতিক সুতিকাগারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷
একাডেমীর মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সহধর্মিনী মিলি রহমান, শিৰাবিদ ও লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমীর সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক জনাব সোহরাব উদ্দীন৷
আলোচনাসভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়৷