দৈনিকবার্তা-ফেনী, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ফেনীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক যাচাই বাছাই করে জেলার ৬টি উপজেলায় ৪৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা স্থগিত করায় ভাতা বঞ্চিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঈদের ঠিক আগ মুহুর্তে ভাতা স্থগিত হওয়াকে তারা অমানবিক হিসাবে দেখছেন।জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন বিভিন্ন উপজেলায় যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় তথ্যে গরমিল বা তথ্য না থাকায় জেলার ৬টি উপজেলায় ৪৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১২৮ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১২৮ জন, ফুলগাজী উপজেলায় ১১৪ জন, দাগনভূঁঞা উপজেলায় ৪২ জন, সোনাগাজী উপজেলায় ৩৫ জন এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩০ জনের ভাতা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা তাদের ভাতা তুলতে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন তাদের ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। ঈদের আগ মুহুর্তে ভাতা স্থগিতের ঘটনায় তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সোনাগাজীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সোনাগাজীতে নুরুল ইসলাম নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করেন, সব কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকে ভাতা তুলতে গিয়ে তিনিসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টি জানতে পারেন। তারা এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বিদর্শী সম্বোধী চাকমা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সুত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং-৪৮.০০.০০০০.০০২.৩১.০০৫.১২(১)/৩৫২ মুলে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ২৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা, এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত সনদ ব্যতিত অন্য সকল গেজেটভুক্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সঠিকতা নির্ণয়ের বিষয়টি পূনরায় উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা তালিকা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত সনদ ব্যতীত অন্য সকল সাময়িক সনদপত্র / গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা / পৌষ্যদের কোন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা পেতে হলে এই মর্মে অঙ্গীকার প্রদান করতে হবে যে, চুড়ান্ত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে না পারলে এ যাবত গ্রহণকৃত সকল সুযোগ সুবিধা প্রত্যার্পন করতে বাধ্য থাকবেন।তখন থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বরাবরে অঙ্গিকার দিয়ে তাদের ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।ভাতা স্থগিত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা মক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান বলেন, উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য যাচাই বাছাই কালে যাদের তথ্য সঠিক বা পুর্নাঙ্গ মনে হয়নি তাদের ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। যদি কেউ তাদের সব তথ্য দিয়ে প্রমান করতে পারেন তাদের স্থগিত ভাতা আবার চালু করা হবে। এতে ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই।
Discussion about this post