দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ নভেম্বর ২০১৫: সরকারি চাকরি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রফিকুর রহমান, আবদুল বাসেত মজুমদার, ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রী পরিষদে উপস্থাপনে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী আজহার উল্লাহ ভূইয়া।তিনি বলেন, আদালত বলেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৬৫ বা যে কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারে।
আদেশের পর আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, আপিল বিভাগের আদেশের পর মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনে আইনগত কোনো বাধা নেই।২০০৬ সালের ১২ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরেরবয়সসীমা বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনা প্রতিপালন না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন শিকদার ২০১৩ সালে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। পরে আরও ৬৮০ মুক্তিযোদ্ধা ওই রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হন। আইনসচিব, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবকে ওই রিটে বিবাদী করা হয়। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ওই আবেদনের রায়ে হাইকোর্ট বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে বিবাদীদের ওই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থাপন করতে হবে।রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি হাই কোর্ট রায় দেয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ওই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থাপন করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয় আদালত।
রিটে বিবাদী ছিলেন- আইন সচিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব।পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ১৬ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলে।এর ধারাবাহিকতায় ৩ নভেম্বর লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীপক্ষ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করে, যার নিষ্পত্তি হয় সোমবার।আদেশের পর আজহার উল্লাহ ভূইয়া বলেন, গত সরকারের মেয়াদে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। তখন সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর, যা পরে ৫৯ বছর করা হয়।এ প্রেক্ষাপটে করা একটি রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা এক বছর বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর
Discussion about this post