দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫: গত দুই বছরের মত এবারও বিজয় দিবসে কোটি কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি। শুক্রবার দুপুর ১২টায় শাহবাগে জাতীয় যাদুঘরের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়েছেন মহান বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত, বিশিষ্ট অভিনেতা হাসান ইমাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হবে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা, বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে কোটি কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের ডাক। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে আগামীর বাংলাদেশের শপথ পাঠ। এরপর বিকেল ৪টা ৪৭ মিনিট থেকে ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের গান। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে বিজয় আতশ শয্যা এবং বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিজয় দিবসের কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টা ৩১ মিনিটে সারাদেশে একযোগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে বলে জানান, বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইমরান এইচ সরকার। দেশে-বিদেশে সব জায়গা থেকেই এ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে আহবান জানান তিনি। মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাঙ্গালির অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে তুলে ধরে, এবারের বিজয় দিবস উদযাপন করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এ লক্ষে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতকে আহ্বায়ক,লেখক শিক্ষাবিদ জাফর ইকবালকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে সদস্য সচিব করে গঠন করা হয়েছে বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী। গণজাগরণ মঞ্চ জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়ে আসা বিজয় উৎসবের ধারাবাহিকতায় এবছর ষোলোই ডিসেম্বরও বিজয় উৎসব উদযাপিত হবে।
তারা বলেছে, ষোলোই ডিসেম্বর কেবল বাঙালির বিজয় দিবসই নয়, এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় আমাদের সাহস, ত্যাগ আর দেশপ্রেমে প্রোজ্জ্বল দৃপ্ত সাহসিকতার এক অনন্য মশাল। স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছরে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে এসেছে সামনে, তেমনি একাত্তরের পরাজিত শক্তির হিংস্র থাবা বারবার আক্রান্ত করেছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে। একদিকে যেমন চলছে একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ, কার্যকর হচ্ছে রাজাকারদের বিচার; তেমনি একাত্তরের মতোই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি হত্যা করছে স্বাধীনতার স্বপক্ষের লেখক- প্রকাশকসহ মুক্তচিন্তক মানুষদের। তাই এবারের বিজয় দিবস উদযাপন হবে আরও সাহসী, আরও টওাণবন্ত আরও বর্ণিল আয়োজনে। এবার কেবল লক্ষ কণ্ঠে নয়; কোটি কণ্ঠে বিশ্বব্যাপী জাতীয় সঙ্গীত গাইবেন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিকামী সকল মানুষ। জাতীয় সঙ্গীতের পবিত্র সুরে বিশ্বব্যাপী প্রতিহত করবেন যুদ্ধাপরাধ, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে। শপথ নেবেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাপ্রসূত শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য।
বিজয় উৎসব ২০১৫ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা পর্ষদের অন্যতম সদস্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খাইরুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক ড. অজয় রায় এবং মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষণী।বিজয় উৎসব ২০১৫-এ সারাদেশের সবাইকে জাতীয় পতাকা হাতে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সপরিবারে উপস্থিত থাকার আহবান জানানো হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে।
Discussion about this post