দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫: ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম নুরুজ্জামান বলেছেন, ’৭১ এ যারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের সহায়তা ও আমাদের মা বোনদের ধর্ষণ ও ইজ্জতহানি করেছে, ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে এদেশকে ছাড়খার করেছে, যারা এদেশের ২০ লক্ষাধিক সাধারণ মানুষসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, যারা এদেশ ও দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করেনা- আমি মনেকরি সেসব যুদ্ধাপরাধীদের শুধুমাত্র ফাঁসি দিলেই চলবে না।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের পর তাদের সন্তান ও আত্মীয় স্বজনদের আস্ফালন দেখে মনে হয় সাপের বাচ্চা সাপই হয়। তারা কখনোই এদেশ ও এদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মেনে নেয়নি। তাই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের পর তাদের লাশগুলো কবরে না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আগামী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের কাছে তাদের অপরাধের ইতিহাস তুলে ধরে সংরক্ষণ করতে হবে। মানুষ যখন সেখানে তাদের দেখতে যাবে, তখন তাদের অপরাধের ইতিহাস জেনে থুতু মারবে। তাদেরকে রাষ্ট্রীয় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। পোল্যান্ডের মতো রাষ্ট্রীয় শত্রুদের সন্তান ও আত্মীয় স্বজনদের চাকুরী ও ভোটাধিকারসহ সকল অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আজ লজ্জা লাগে যে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বারবার করা হচ্ছে। অথচ যারা আমাদের মা বোনদের ধর্ষণ ও ইজ্জতহানি করেছে, ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়েছেও লুটতরাজ করেছে, এদেশের সাধারণ মানুষসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, এদেশ ও দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করেনা –তাদের তালিকা এখনো তৈরী হয়নি। আমি প্রধান মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো- মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের তালিকা তৈরী ও জনসম্মুখে প্রকাশের জন্য। তাদের সন্তান ও আত্মীয় স্বজনরা কে কোথায় কি করছে সে সব তথ্য ও ইতিহাস সংগ্রহ করার জন্য।
তিনি মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য কালে এসব কথা বলেন। গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা পুলিশ লাইন মিলনায়তনে এ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় আ্যাডভোকেট রহমত আলী এমপি, সাবেক ডিআইজি তোফাজ্জল হোসেন, সাবেক পুলিশ সুপার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা কাজী মোজাম্মেল হক, আ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, জিসিসি’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, আ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলমসহ প্রমূখ মুক্তিযোদ্ধা ও নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এক’শ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্বর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠাণ শেষে আতশ বাজি ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠাণ পরিবেশন করা হয়।
Discussion about this post