দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ জানুয়ারি ২০১৬: মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন এক ব্যক্তি। নালিশি অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ৭ ফেব্র“য়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে এই নালিশি মামলা গ্রহণের আবেদনটি করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিক। সকালে সংশ্লিষ্ট আদালতে এ আবেদনটি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত মামলা নেওয়া হবে কি না সে আদেশ দেবেন।আদালত সূত্রে জানা গেছে, নালিশি অভিযোগ তদন্ত করে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আগামী ৭ ফেব্র“য়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
নালিশি মামলার এই আবেদনে বলা হয়, গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে খালেদা জিয়া এবং গত ২৫ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের দেওয়া বক্তব্যে তিনি (মামলার বাদী) ব্যথিত হয়েছেন। মামলার বাদী বলেন, একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানিকর মামলা নেওয়ার আবেদন করেছেন।২১ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি বলেন, আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।এরপরে ২৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা নির্বোধের মতো মারা গেছেন।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।এরপর ২৫ ডিসেম্বর খালেদার ওই বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা জরিপ করে দেখতে বলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ‘নির্বোধের মতো মরেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।তাদের এই বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এক আইনজীবী উকিল নোটিস পাঠিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন এবং খালেদার নামে আদালতে দুটি মামলাও করা হয়।
Discussion about this post