একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছে, তাদের একটি তালিকা দিয়েছে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন।একাত্তরে বাংলাদেশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ড কার্যকরের মধ্যে গড়ে ওঠা সংগঠনটির আহ্বায়ক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ২০০জনের এই তালিকা তুলে ধরেন। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন আন্তজার্তিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের আহবায়ক ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশের পর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচারের দাবিও জোরাল হয়ে উঠেছে।এরপরই পাকিস্তানি সৈন্যদের গণবিচারের উদ্যোগ নিয়ে শাজাহান খানের নেতৃত্বে নামে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন।একাত্তরে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এলেও তালিকায় তার চেয়ে পাঁচজন বেশি থাকার ব্যাখ্যাও দেন শাজাহান খান।
তিনি বলেন, ১৯৫ জনের তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও নতুন পাঁচজনের তথ্য পাওয়ায় ২০০ জনের তালিকা করা হয়েছে।এরকম আরও তথ্য আসছে দাবি করে এই মন্ত্রী বলেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে।আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণ বিচার আন্দোলন যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানী ২০১ জন সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানীদের নাম,পদবী ও ব্যক্তিগত পরিচিতিও প্রকাশ করা হয়।যুদ্ধাপরাধী পাক সেনা সদস্য ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী ধর্ষন , অগ্নি সংযোগ বাঙ্গালি হত্যা ও মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডে অভিযুক্ত’ এ কথা ঘোষণা করে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে অপরাধীদের তালিকা সংগ্রহ ও তৈরি করতে গিয়ে পূর্ব ঘোষিত ১৯৫ জন পাক সেনা কর্মকর্তার সাথে পাকিস্তান বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনীর আরো ৬ জন কর্মকর্তার সন্ধান পেয়েছি। আরো সংগ্রহের কাজ চলছে।
শাজাহান খান বলেন, পাকিস্তানী সেনা সদস্যরা যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে এর মধ্যে যুদ্ধাপরাধের মতো ঘৃণ্য, মানবেতর ঘটনাবলীর নীল নকস্ াপ্রণয়ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দানের অভিযোগে অভিযুক্ত ৬৮ জন ।তিনি বলেন, জেনেভা কনভেনশন সহ আন্তর্জাাতিক সকল যুদ্ধনীতি লংঘন করে সরসরি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুট ও অগ্নি সংযোগে অংশ নেয় ১১৮, ব্যাপক হারে গণহত্যার অংশ নেয় ১৪ জন, এই ১৪ জনের মধ্যে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ৩জন এ নৌ বাহিনীর ৩ জন।শাজাহান খান বলেন, এর মধ্যে আমাদের আন্দোলনের দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী সেনাদের বিচারের প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অভিনন্দন জানচ্ছি সেইসাথে ট্রাইবুন্যানাল দ্বারা গঠিত তথ্য সংগ্রহ ও কমিটিকে আমাদের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদান করবো।
তিনি বলেন,বুধবার ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে স্পিকারের কাছে পাকিস্তানী সেনা যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা ও স্বারকলিপি দেয়া হবে।শাজাহান খান বলেন,এ ছাড়া আমাদের ঘোষিত দাবীগুলোর প্রেক্ষিতে সরকার আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। তার মধ্যে অন্যতম জামাত ইসলামকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণ, জামায়াত ইসলামকে সংগঠন হিসাবে বিচার করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, ও তাদের স্ব পরিবারে নাগরিকত্ব বাতিল করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আ্যক্ট ১৯৭৩ সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। একই সাথে আরেকটি দাবী হচ্ছে মুক্তি যুদ্ধ, গণহত্যা, নির্যাতন ওগণ আন্দোলনের অবমাননা, বা অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ওশহীদের অপমান করে বক্তব্য প্রদানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যেও জেনোসাইড ডিনায়াল ল’ এর আদলে আইন প্রনয়ন করা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আব্দুল মান্নান চৌধুরী,মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, মহা সচিব এমদাদ হোসেন,বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের আলাউদ্দিণ মিয়া,শ্রমিক নেতা এ জেড কামরুল আনাম, চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াত, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী প্রমূথ।
Discussion about this post