• বঙ্গবন্ধু
  • আমাদের পাতা
  • মতামত
  • বিজ্ঞাপন
  • যোগাযোগ
Tuesday, January 31, 2023
  • Login
No Result
View All Result
মুক্তিযোদ্ধা নিউজ
  • রাজনীতি
  • মুক্তিযোদ্ধা
    • বীর মুক্তিযোদ্ধা
    • প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা
  • সাহিত্য পাতা
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • মুক্তিযুদ্ধের গল্প
    • ছবি গ্যালারি
    • ভিডিও গ্যালারি
  • প্রজ্ঞাপন
  • মুক্তিযোদ্ধা অনুসন্ধান
মুক্তিযোদ্ধা নিউজ
  • রাজনীতি
  • মুক্তিযোদ্ধা
    • বীর মুক্তিযোদ্ধা
    • প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা
  • সাহিত্য পাতা
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • মুক্তিযুদ্ধের গল্প
    • ছবি গ্যালারি
    • ভিডিও গ্যালারি
  • প্রজ্ঞাপন
  • মুক্তিযোদ্ধা অনুসন্ধান
No Result
View All Result
মুক্তিযোদ্ধা নিউজ
No Result
View All Result
Home Common

মানবতাবিরোধী অপরাধ:জামায়াতের আমির নিজামীর ফাঁসি

Syed Refaquat RAJOWAN by Syed Refaquat RAJOWAN
2016-05-10 18:55:14
in Common, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি
1 min read

মানবতাবিরোধী অপরাধজামায়াতের আমির নিজামীর ফাঁসি

একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর (৭৩) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা।ফাঁসি কার্যকর করার সময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা জেলা প্রশাসক (ম্যাজিস্ট্রেট) সালাউদ্দিন আহমেদ, সিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা, ডিএমপির পক্ষে ডিসি ডিবি উত্তর শেখ নাজমুল আলম, সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির, ডিসি লালবাগ মফিজ উদ্দিন। ঘড়ির কাঁটা যখন ১২টা বেজে ১০ মিনিট তখন সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির তার হাতে ধরা রুমালটি ফেলে দেন। আর তখনই যম টুপি ও গলায় দড়ি পরিহিত নিজামীর পায়ের নিচ থেকে পাটাতন সরিয়ে ফেলেন জল্লাদ। এ অবস্থায় ১৫ মিনিট ঝুলিয়ে রাখার পর তোলা হয়। সিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা মৃত্যু নিশ্চিত করে ডেথ সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর করেন।এর আগে ফাঁসির বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা চলে সন্ধ্যা থেকেই। পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা শেষবারের মতো নিজামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।রীতি অনুযায়ী কারাগার মসজিদের ইমামকে সাথে নিয়ে জেল সুপার কনডেম সেলে যান। এরপর ইমাম আসামিকে তওবা পড়ান। ফাঁসি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা আগেই আসামিকে গোসল ও ইচ্ছানুযায়ী খাবার দেয়া হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

RelatedPosts

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খেতাবপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা

তৃতীয় ধাপে ১২ হাজার ১১৬ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ

২০ হাজার টাকা করে সম্মানী পাবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা

মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ছে

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগারসহ এর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বস্ত রের সদস্যরা কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন রাজধানীর বিশেষ বিশেষ পয়েন্টগুলো। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে পুরো রাজধানীজুড়ে কয়েক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজিবি সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।তবে কত সময় পর্যন্ত বিজিবি মোতায়েন থাকবে এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। নিজামীর ফাঁসি কার্যকরকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিন আহমেদ।মঙ্গলবার সোয়া ১০টার দিকে তিনি কারাগারে প্রবেশ করেন। এর পর পরই সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এমদাদুল হক ও ডিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি নাজমুল আলমকে কারাগারে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

রাত ১০টা ৫৭ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন ভারপ্রাপ্ত আইজিপি কর্নেল ইকবাল হাসান।এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজামীর সঙ্গে শেষ দেখা করে কারগার থেকে বেড়িয়ে যান তার পরিবারের সদস্যরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রধান দুই জল্লাদের মধ্যে জল্লাদ রাজু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছে। মঙ্গলবার (১০ মে) বেলা ৩টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটক দিয়ে তাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তবে এখনো অন্য প্রধান জল্লাদ শাহজাহানের কারাগারে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের জন্য প্রধান জল্লাদ হিসেবে সন্ধ্যা নাগাদ কাশিমপুর কারাগার থেকে শাহজাহানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয় বলে জানিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ। তবে মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা প্রধান জল্লাদ জনি ও ছাত্তার এবার থাকছেন না বলেও তারা জানায়। কারা সূত্রটি আরও জানায়, জনির বাম পা কেটে ফেলা হয়েছে এবং ছাত্তারের কোমড়ে রয়েছে সমস্যা। সে কারণেই তাদের আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অতীতে যতগুলো রায় কার্যকর করা হয়েছে তার তুলনায় এবার নিজামীর রায়কে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারী পুলিশ সদস্যরাও স্ব স্ব অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে নিজামীর পরিবার তার সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করেছে। রাত সোয়া ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিন আহমেদ। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করলেন পরিবারের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (১১ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যান চার শিশুসহ পরিবারের ২৬ সদস্যরা।বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদকর্মীরা নানা প্রশ্ন করলেও কারাফটকের সামনে কোনো কথা বলেননি কেউই। এসময় সবার চেহারাই বিমর্ষ দেখা গেছে।এর আগে ৭টা ৫০ মিনিটে তিনটি গাড়িতে করে কারাগারের মূলফটকে এসে পৌঁছে। প্রথমে একটি কালো পাজেরো (ঢাকা মেট্রো-চ১৬-০২৫৭) কারাগারে প্রবেশ করে। দ্বিতীয়টি প্রাইভেটকার ঢাকা মেট্রো ঘ১১-৮৬৩৮ এবং সবশেষে আরেকটি মাইক্রোবাস ঢাকা মেট্রো চ ৫৩-১৪৬৪৯ কারাফটকে প্রবেশ করে।নিজামীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন তার স্ত্রী শামসুন্নাহার নিজামী, দুই ছেলে ড. খালিদ ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমিন, মেয়ে খাদিজা মহসীনা, বড় ছেলের স্ত্রী, দুই নাতি, নিজামীর চাচাতো ভাই, ভাইয়ের মেয়ে।এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ নিজামীর পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে ফোন দেয়। অবশ্য নিজামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারকে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর লাশ পরিবহনের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নূও হোসেন ও হাজী মো. জমির আলীর এ দুই অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো চ ১১-২৪৪২ নম্বরের চালক জমির আলী। এদিকে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আল বদর প্রধান মতিউর রহমান নিজামী। ফলে তার মৃত্যদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই। বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও জানান, ফাঁসি কার্যকর যেকোনো সময়।

এর অংশ হিসেবেই কারা ফটকের সামনে বাড়ানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জল্লাদকেও। নিজামীর সাথে দেখা করতে কারাগারে গেছেন তার পরিবারের সদস্যরাও।ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নিজামীর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও। দিনভর দফায় দফায় কারাগারে বৈঠক করেন কর্মকর্তরা। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফাঁসির নির্বাহী আদেশ একটি ব্রিফকেসে করে কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসেন সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির। এদিকে সন্ধ্যা থেকে দুই অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়। এর একটিতে নিজামীর মৃতদেহ বহন করে তার গ্রামের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়াতে নেয়া হবে।

এর আগে স্বজনরা দেখা করে আসার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পৌনে দুই ঘণ্টা জামায়াতে ইসলামীর আমিরের সঙ্গে থেকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় বেরিয়ে আসেন তার স্বজনরা।এর পরপরই রাত ১০টার দিকে ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. সালাউদ্দিন এবং সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধাকে কারা অভ্যন্তরে ঢুকতে দেখা যায়। আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় তাদের থাকতে হয়। কারা অভ্যন্তরে ফাঁসিকাষ্ঠ তৈরির চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ফাঁসিকাষ্ঠে নেওয়ার আগে নিজামীকে তওবা পড়ানোর জন্য ইমাম মো. মনিরুজ্জামানও কারা অভ্যন্তরে নেয়া হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানান। কারাগারের সামনে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব দোকানপাটও।কারাফটকের সামনে র‌্যাব-পুলিশের বেষ্টনি ছাড়াও পুরো এলাকা কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়।মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেননি বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।কারাগারে জামায়াত আমিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে মঙ্গলবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে মন্ত্রী জানান, ক্ষমা না চাওয়ায় নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে নির্বাহী আদেশ কারা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।স্বজনদের ডেকে পাঠানো এবং কারাফটকে নিরাপত্তা জোরদারের মধ্যে কিছু ইঙ্গিত মিললেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কোনো স্পষ্ট ঘোষণা দিনভর পাওয়া যাচ্ছিল না।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর কবির সন্ধ্যায় কারা অভ্যন্তরে যাওয়ার পরপরই কারাগারের ভেতরে-বাইরে তৎপরতা বেড়ে যায়।এর মধ্যে জামায়াত আমিরের স্বজনদের দেখা করতে ডেকে পাঠানো হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে আসামিকে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়ে থাকে।নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় গত সোমবার প্রকাশের পর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগই ছিল এই যুদ্ধাপরাধীর। তিনি ক্ষমা না চাইলে দণ্ড যে কোনো সময় কার্যকর হবে বলে মঙ্গলবার দুপুরেই জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।এর মধ্যে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান এবং কারা উপ মহাপরিদর্শক গোলাম হায়দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘুরে আসার খবর আসে।তারা কারাগার সংলগ্ন কারা অধিদপ্তরে ফেরার পর বিকাল ৪টার দিকে একটি ব্যাগ নিয়ে জ্যেষ্ঠ কারাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর কবির যান কারা অধিদপ্তরে।এক ঘণ্টা পর তিনি ওই ব্যাগটি নিয়ে পুনরায় কারা অভ্যন্তরে ঢোকার পরপরই গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা জল্লাদ রাজুকে কারাফটক দিয়ে ঢোকাতে দেখা যায়।

কারা কর্মকর্তারা জানান, নিজামীর দণ্ড কার্যকরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ নিয়েই ঢোকেন জাহাঙ্গীর কবির। কারাধ্যক্ষ ঢোকার পরপরই কারাফটক এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যায়। ফটকের সামনে র‌্যাবের একটি দল বেষ্টনি তৈরি করে, তার সামনে পুলিশ সদস্যরা আরেকটি বেষ্টনি তৈরি করে। প্রায় ২০০ পুলিশ সদস্যকে কারাগারের বাইরে মোতায়েন হয়। র‌্যাবের সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের তৎপরতাও দৃশ্যমান।

সাড়ে ৭টার দিকে কারাগারের সামনের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এরপর মানুষের চলাচলও সীমিত হয়ে যায়। তার ১৫ মিনিট পর নিজামীর স্বজনরা তিনটি গাড়িতে করে কারাফটকে উপস্থিত হন। দোকানপাট বন্ধের আগেই নাজিমউদ্দিন সড়কে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনের সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।চকবাজারের হাজী সেলিম টাওয়ার সামনে রাস্তায়, জেলখানার উত্তর গেটে মাকুর শাহ মাজারের সামনে, মৌলভীবাজার মোড়ে তিনটি ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, নিজামীর ফাঁসিকে কেন্দ্র করে কারাগারের সামনে সাংবাদিক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অনেক মানুষ জড়ো হচ্ছে, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।রিভিউ খারিজের রায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি নিজামীকে সোমবার শোনানো হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার রিভিউয়ের রায় খারিজের পরদিন কাশিমপুর কারাগারে নিজামীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন পরিবারের সদস্য। এরপর রোববার তাকে ঢাকা কারাগারে আনা হয়বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে একাত্তরের আলবদর নেতা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে এই বছরের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়। তা পুনর্বিবেচনায় নিজামীর আবেদন গত ৫ মে খারিজ হয়ে যায়।বিচার শুরুর চার বছর পর ওই রায় সোমবার প্রকাশের প্রেক্ষাপটে শুরু হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া।একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, লুট, ধর্ষণে পরিকল্পনা, সাম্প্রদায়িক উসকানি ও সহায়তাসহ মোট ১৬টি অভিযোগে আল বদর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনও খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয় ২০১৩ সালের শেষের দিকে। এরপর ২০১৪ সালের ২৪ জুন দুই দফা যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল। ওই দিন রায়ের সকালে নিজামীর অসুস্থতায় রায় ঝুলে যায়। পরে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ পাঁচটি অপরাধে নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। অন্যগুলোতে যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরুর দিনগুলোতে ছিলেন জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি। পদাধিকার বলে তিনি ছিলেন আল-বদর বাহিনীর প্রধান, যে আধাসামরিক সংগঠনটি পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় দেশজুড়ে হত্যা, ধর্ষণসহ ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটায়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের বুদ্ধজীবীদের হত্যা করাই ছিল এ বাহিনীর মূল লক্ষ্য।২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাঁকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি। আপিলে আরও তিনটি অভিযোগ থেকে নিজামী খালাস পান। বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাঁকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ, এর মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এগুলো হলো পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার রূপসী, বাউসগাড়ি ও ডেমরা গ্রামের ৪৫০ জনকে নির্বিচার হত্যা ও ধর্ষণ, ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে হত্যা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা। বাকি দুটি অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সর্বোচ্চ আদালত।

নিজামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ:

অভিযোগ ১: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার চালানোর কারণে একাত্তরের ৪ জুন পাকিস্তানি সেনারা পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিনকে অপহরণ করে নূরপুর পাওয়ার হাউস ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে নিজামীর উপস্থিতিতে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ১০ জুন তাকে ইছামতী নদীর পাড়ে আরো কয়েকজনের সঙ্গে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ২ : একাত্তরের ১০ মে বেলা ১১টার দিকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়ি গ্রামের রূপসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সভা হয়। স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের উপস্থিতিতে ওই সভায় নিজামী বলেন, শিগগিরই পাকিস্তানি সেনারা শান্তি রক্ষার জন্য আসবে। ওই সভার পরিকল্পনা অনুসারে পরে ১৪ মে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বাউশগাড়ি, ডেমরা ও রূপসী গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে। প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে সেদিন ধর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা।

এ ঘটনায় নিজামীর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ) ও (জি), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৩: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মে মাসের শুরু থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ব্যবহৃত হয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প হিসাবে। রাজাকার ও আলবদর বাহিনীও সেখানে ক্যাম্প খুলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে থাকে। নিজামী ওই ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র করতেন বলে প্রসিকিউশনের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), (জি) ও (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৪: নিজামীর নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় রাজাকার বাহিনী পাবনার করমজা গ্রামে হাবিবুর রহমান নামে একজনকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ৮ মে নিজামীর রাজাকার ও আলবদর বাহিনী ওই গ্রাম ঘিরে ফেলে নয়জনকে হত্যা করে। রাজাকার বাহিনী একজনকে ধর্ষণসহ বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।এ ঘটনায় হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামির বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ) ও (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৫: ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে নিজামীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আড়পাড়া ও ভূতেরবাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে ২১ জন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে। সেখানে বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগও করা হয়।নিজামীর এ ঘটনায় হত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ) ও (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৬: নিজামীর নির্দেশে ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে যায় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা। তারা গ্রামের ডা. আব্দুল আউয়াল ও তার আশেপাশের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫২ জনকে হত্যা করে।এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৭: একাত্তর সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে নিজামীর দেওয়া তথ্যে রাজাকার বাহিনীকে নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী পাবনার বৃশালিখা গ্রাম ঘিরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সেলিমের বাবা সোহরাব আলীকে আটক করে। তাকে রাস্তায় নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর স্ত্রী ও সন্তানদের সামনেই হত্যা করা হয়।এ ঘটনায় নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তখনকার বদর নেতা নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ) ও (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৮: একাত্তরের ৩০ আগস্ট ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর প্রধান নিজামী তার সংগঠনের তখনকার সেক্রেটারি আলী আহসান মুজাহিদকে সঙ্গে নিয়ে নাখালপাড়ার পুরোনো এমপি হোস্টেলে যান এবং সেখানে আটক মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন বিচ্ছু জালাল, বদি, রুমি (শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ছেলে), জুয়েল ও আজাদকে দেখে তাদের গালিগালাজ করেন। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনকে নিজামী বলেন, রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আদেশের আগেই তাদের হত্যা করতে হবে। নিজামীর পরামর্শ অনুযায়ী পরে জালাল ছাড়া বাকি সবাইকে হত্যা করা হয়।এ ঘটনায় নিজামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ৯: নিজামী ও রাজাকার বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানি বাহিনী পাবনার বৃশালিখা গ্রাম ঘিরে ফেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রফুল্ল, ভাদু, মানু, স্বস্তি প্রামানিক, জ্ঞানেন্দ্রনাথ হাওলাদার ও পুতুলসহ ৭০ জনকে হত্যা ও ৭২টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় একটি সম্প্রদায়কে নির্মূল করতে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), (সি), (আই), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১০: মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে পাবনার সোনাতলা গ্রামের অনিল চন্দ্র কুণ্ডু নিরাপত্তার জন্য ভাই-বোনদের নিয়ে ভারতে চলে যান। পরে অগাস্টে তিনি এলাকায় ফিরে আসেন। নিজামীর নির্দেশে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা তার এবং আশেপাশের বহু মানুষের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়।এ ঘটনায় নিপীড়নের অভিযোগে আনা হয়েছে আসামির বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১১: একাত্তরের ৩ অগাস্ট চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউটে ইসলামী ছাত্রসংঘের এক সভায় নিজামী বলেন, পাকিস্তান আল্লাহর ঘর। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তিনি প্রিয় ভূমির হেফাজত করছেন। দুনিয়ার কোনো শক্তি পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না। সেদিন তার উপস্থিতিতেই নিরীহ বাঙালিদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য ইসলামী ছাত্র সংঘ, আলবদর, রাজাকারদের মতো সহযোগী বাহিনীগুলোকে উসকানি দেওয়া হয়।ওই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এফ), ৪ (১), ৪ (৩) এবং ২০ (ই) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১২: একাত্তরের ২২ অগাস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল মাদানীর স্মরণসভায় নিজামী বলেন, যারা পাকিস্তানকে ভাঙতে চায়, তারা ইসলামের শত্রু। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে ইসলামের শত্রুরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে মন্তব্য করে পাকিস্তানের শত্রুদের নির্মূল করার আহ্বান জানান তিনি।ওই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এফ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১৩: ওই বছর ৮ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে ইসলামী ছাত্রসংঘের সভায় নিজামী বলেন, পাকিস্তানের অখণ্ডটা রক্ষায় হিন্দুস্তানের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে রাজাকার, আলবদর সদস্যরা প্রস্তুত। উসকানিমূলক ওই বক্তব্যে মুক্তিকামী বাঙালিকে ভারতের সহযোগী হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। ওই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এফ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১৪: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ সেপ্টেম্বর যশোরে রাজাকারদের প্রধান কার্যালয়ে এক সুধী সমাবেশে নিজামী প্রত্যেক রাজাকারকে ইমানদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। এসময় তিনি বলেন, আল্লাহর পথে কেউ কখনো হত্যা করে, কেউ মারা যায়। এসব বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ছাত্রসংঘের সদস্য, রাজাকার ও অন্যদের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের উসকানি ও প্ররোচনা দেন নিজামী।ওই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এফ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১৫: একাত্তরের মে মাস থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজাকার ক্যাম্প ছিল। নিজামী প্রায়ই ওই ক্যাম্পে গিয়ে রাজাকার সামাদ মিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করতেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়।ওই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (জি) ও (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগ ১৬: মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ঊষালগ্নে অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে আলবদর বাহিনী। দেশের বুদ্ধিজীবী শ্রেণীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে আলবদর সদস্যরা ওই গণহত্যা ঘটায়। জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ ও আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে ওই গণহত্যার দায় নিজামীর ওপর পড়ে।একটি জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ওই ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে নিজামীর বিরুদ্ধে, যা ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (সি) (আই), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উল্লেখ্য, নিয়মানুযায়ী রায় পড়ে শোনানোর পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়। তবে নিজামীর দল জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে- নিজামী তার স্বজনদের জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না তিনি। আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে নিজামীকে ফাঁসির রশিতে ঝোলাতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকবে না।এদিকে সোমবার (০৯ মে) একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম ে কোর্ট রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর সেটি পাঠানো হয় ট্রাইব্যুনালে। সেখান থেকে রায়ের কপি যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।গত বৃহস্পতিবার (০৫ মে) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এক শব্দের এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘাষণার সময় প্রধান বিচারপতি শুধু বলেন, ডিসমিসড।

Tags: একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর (৭৩) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছেজামায়াতের আমির নিজামীর ফাঁসিডিএমপির পক্ষে ডিসি ডিবি উত্তর শেখ নাজমুল আলমঢাকা জেলা প্রশাসক (ম্যাজিস্ট্রেট) সালাউদ্দিন আহমেদমঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়মানবতাবিরোধী অপরাধ:জামায়াত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসিমৃত্যু নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা।ফাঁসি কার্যকর করার সময় উপস্থিত ছিলেনসিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবিরসিভিল সার্জন আব্দুল মালেক মৃধা
Share7Tweet5Share1
Previous Post

নিজামীর ফাঁসি কার্যকর

Next Post

মাথা থেকে একটা কলঙ্কদাগ দূর হলো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Syed Refaquat RAJOWAN

Syed Refaquat RAJOWAN

Editor In Chief Muktijoddha NEWS and Doinikbarta (http://doinikbarta.com)

Discussion about this post

Popular News

  • সহজ শর্তে ‘মুক্তিযোদ্ধা গৃহনির্মাণ ঋণ’ প্রতিবেদন চূড়ান্ত

    সহজ শর্তে ‘মুক্তিযোদ্ধা গৃহনির্মাণ ঋণ’ প্রতিবেদন চূড়ান্ত

    8723 shares
    Share 5267 Tweet 1440
  • অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি জামুকার সহকারী উপপরিচালক বরখাস্ত

    6460 shares
    Share 3401 Tweet 1275
  • মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ছে

    4173 shares
    Share 1669 Tweet 1043
  • বিনা সুদে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা করে ঋণ পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা।

    3977 shares
    Share 2178 Tweet 750
  • লাল মুক্তিবার্তায় নাম থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই লাগবে না

    2680 shares
    Share 1072 Tweet 670
  • বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের নতুন আদেশ

    2243 shares
    Share 897 Tweet 561
  • ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রকাশ

    2035 shares
    Share 814 Tweet 509
  • মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নতুন করে নাম এলো যাদের

    2097 shares
    Share 903 Tweet 498
  • মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ২০ হাজার টাকা করার সুপারিশ

    1957 shares
    Share 783 Tweet 489
  • অনলাইনে মিলবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ৩৮ সেবা

    2881 shares
    Share 1871 Tweet 421

Recommended

যুদ্ধাপরাধী মামলার দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদন্ড

6 years ago

পঞ্চদশ সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রীর রাজার ক্ষমতা : বিএনপি

7 years ago

৯ ডিসেম্বর ভোলার লালমোহন পাক হানাদার মুক্ত দিবস

8 years ago

মীর কাসেমের মৃত্যুদন্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

7 years ago

মুক্তিযোদ্ধা

Category

  • Common
  • অপরাধ
  • ছবি গ্যালারি
  • প্রজ্ঞাপন
  • প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা
  • বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • মতামত
  • মুক্তিযুদ্ধ
  • মুক্তিযুদ্ধের গল্প
  • মুক্তিযোদ্ধা
  • মুক্তিযোদ্ধা অনুসন্ধান
  • মুক্তিযোদ্ধা নিপীড়ন
  • যুদ্ধাপরাধ
  • রাজনীতি
  • সশস্ত্র বাহিনী
  • সাহিত্য পাতা
  • স্বাস্থ্য ও চিকিত্‍সা

Site Links

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

About Us

দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের প্রজন্মের সকল খবরাখবর নিয়ে আমাদের এই প্রচেষ্টা, বাংলাদেশের সর্ব প্রথম এবং একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম। সাথে থাকুন, অংশগ্রহণ করুন, চলুন একসাথে এগিয়ে যাই।।

  • বঙ্গবন্ধু
  • আমাদের পাতা
  • মতামত
  • বিজ্ঞাপন
  • যোগাযোগ

© 2020 মুক্তিযোদ্ধা নিউজ - বাংলাদেশের সর্ব প্রথম এবং একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম। by i-Bangla Limited.

No Result
View All Result
  • রাজনীতি
  • প্রজ্ঞাপন
  • মুক্তিযোদ্ধা
    • বীর মুক্তিযোদ্ধা
    • প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা
  • সাহিত্য পাতা
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • মুক্তিযুদ্ধের গল্প
    • ছবি গ্যালারি
    • ভিডিও গ্যালারি
  • মুক্তিযোদ্ধা অনুসন্ধান

© 2020 মুক্তিযোদ্ধা নিউজ - বাংলাদেশের সর্ব প্রথম এবং একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম। by i-Bangla Limited.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In