সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় ফিরিয়ে নেয়া তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে আর ফেরত আনার প্রয়োজন নেই। তুরস্কের দূতাবাস না থাকলেও বাংলাদেশের চলবে। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে বৃহস্পতিবার সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ঢাকা বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন, তুরস্কে এখন যারা ক্ষমতায় রয়েছে এরা যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতের অনুসারী। জামায়াতের কারও ফাঁসি হলে তারা কথা বলতেই পারে। কিš‘ এর প্রতিক্রিয়ায় তারা রাষ্ট্রদূতকে তুরস্কে নিয়ে গেছে। তাকে ফেরত আনার দরকার নেই। তুরস্কের দূতাবাস না থাকলেও বাংলাদেশের চলবে।কে এম সফিউল্লাহ বলেন, এদেশে পাকিস্তানী দালালদের ফাঁসি হলে পাকিস্তান কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। নিজামীর ফাঁসির পর তারা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে খারাপ চিঠি দিয়েছে, আমরাও তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকেছি। পাকিস্তানের পাশাপাশি তুরস্ক যেটা করেছে তা কূটনীতির কোন শিষ্টাচারের মধ্যেই পড়ে না।
তিনি বলেন, যারা আমাদের রক্ত ঝরিয়েছিল তারা পতাকা নিয়ে ক্ষমতায় থাকবে এটাতো সহ্য করা যায় না। সেখান থেকেই সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যাত্রা শুরু হয়।তিনি বলেন, অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলাম, সেই অস্ত্র অন্যের হাতে তুলে দেয়ার জন্যতো যুদ্ধ করিনি।ঢাকা বিভাগীয় কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি আবুল হাসেম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবিব। অন্যান্যের মধ্যে ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ম. হামিদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নুরুল আলম, সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল আলম শহীদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, দপ্তর সম্পাদক মেজর জেনারেল (অব.) শেখ দলিল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সহ-সভাপতি মীর মোহাম্মদ আসালত, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান দেওয়ান বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মেজর জেনারেল (অব.)কে এম শফিউল্লাহ ঢাকা বিভাগীয় কমিটির ২৫জন সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হারুন হাবীব বলেন, তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অবিলম্বে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা-না রাখার বিষয়টি সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঠিক করতে হবে। তাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করা হোক। তাদেরকে ছাড়াও বাংলাদেশের চলবে।তিনি বলেন, সিমলা চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে তাদের জিম্মায় দেয়া হয়। পাকিস্তান তাদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছিল। তারা যেহেতু বিচার করেনি, আমাদের এখানেই এদের বিচার কাজ শুরু করতে হবে।একই সঙ্গে তাদের কাছ থেকে যে ন্যায্য হিস্যা রয়েছে সেটা ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সারাদেশে একজন যুদ্ধাপরাধী বেঁচে থাকা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া চালু রাখা, পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো ১৯৫জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং পাকিস্তান থেকে প্রাপ্ত সম্পদের ন্যায্য হিস্যা উদ্ধারে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
Discussion about this post