মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে যেকোনো দিন রায়ের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখার নির্দেশ দেন।
এর আগে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ওপর আইনী যুক্তি উপস্থাপন পেশ করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান, আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান তাদের আসামিদের পক্ষে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। এরপর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে নিয়ম অনুসারে এ মামলাটি যেকোনো দিন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ৯ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশনের আনা ১৭ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন। আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিল না। উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর সাবেক সাংসদ এম সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। মোট ১২ আসামির মধ্যে বাকি তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দেন আদালত।
চলতি বছরের ১৬ জুন সাখাওয়াতসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এর আগে আদালত ৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
২০১২ সালের ১ এপ্রিল থেকে এ মামলায় তদন্ত শুরু করে গত ১৪ জুন শেষ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান। মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩২ জনকে এ মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। ১৯৯১ সালে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে যশোর-৬ আসন থেকে সাখাওয়াত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু মেয়াদপূর্তির আগেই জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। মাওলানা সাখাওয়াত গত সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ৫টি হলো :
অভিযোগ ১ : যশোরের কেশবপুর উপজেলার বোগা গ্রামে এক নারীকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ধর্ষণ।
অভিযোগ ২ : একই উপজেলার চিংড়া গ্রামের চাঁদতুল্য গাজী ও তার ছেলে আতিয়ারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যা।
অভিযোগ ৩ : কেশবপুরের চিংড়া গ্রামের মো. নুরুদ্দিন মোড়লকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন।
অভিযোগ ৪ : কেশবপুরের হিজলডাঙার আ. মালেক সরদারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও খুন।
অভিযোগ ৫ : কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের মীরন শেখকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন।
Discussion about this post