বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ভাষা শহীদদের রক্তঝরা স্মৃতি নিয়ে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র“য়ারি’ গানের ¯্রষ্টা, বরেণ্য ভাষা সংগ্রামী ও পথিকৃৎ সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীরকে আজীবন সম্মাননা জানানো হয়েছে। শনিবার বেলা সোয়া এগারোটায় এ সম্মাননা জানায় বাংলাদেশ প্রতিদিন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ভবনে বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসের কনফারেন্স রুমে সম্মাননা অনুষ্ঠিত হয়।বসুন্ধরা গ্র“পের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান অনুষ্ঠানে প্রধান হিসাবে উপস্থিত থেকে গাফফার চৌধুরীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন।সম্মাননা পেয়ে গাফফার চৌধুরী বলেন, আমি গর্বিত, আনন্দিত।
দ্দরুতেই আবদুল গাফফার চৌধুরীকে বসুন্ধরা গ্র“পের চেয়ারম্যান ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম এবং ডেইলি সান এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আমির হোসেন।আবদুল গাফফার চৌধুরী সম্পর্কে বসুন্ধরা গ্র“পের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, তার কলম কোনোদিন কাউকে ভয় পায়নি। নির্ভয়ে-নিঃশব্দে লিখে গেছে দেশের পক্ষে, দেশের মানুষের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির পক্ষে। যখন যে সরকারই আসুক না কেন, তার কলম কোনো দিনই থামেনি।
সাংবাদিকতা, বাংলা সাহিত্য ও বাংলা ভাষায় বিশাল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ প্রতিদিন এই প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানায়।অনুষ্ঠানে গাফফার চৌধুরীর হাতে ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেওয়া হয়।সম্মাননা প্রসঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান বলেন, গাফফার চৌধুরীকে সম্মাননা জানানোর মতো দুঃসাহস আমাদের নেই। তবু বলবো, বাংলাদেশ প্রতিদিন সাহস করে সম্মাননা জানাচ্ছে। সারা দেশ থেকে, ১৬ কোটি মানুষের কাছ থেকে তার সম্মাননা পাওয়া উচিত। দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছ থেকে তার সম্মাননা পাওয়া উচিত’।গাফফার চৌধুরী যেন জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্বাধীনভাবে লিখে যেতে পারেন- সে প্রত্যাশাও করেন বসুন্ধরার চেয়ারম্যান।আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখাগুলো সমন্বিত করে প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।
কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বাংলা ভাষায় দু’টি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত- আমার সোনার বাংলা রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আর একটি আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো রচনা করেছেন গাফফার চৌধুরী’। গাফফার চৌধুরী বাংলা সাহিত্যেরও একজন বড় লেখক উল্লেখ করে মিলন বলেন, ‘স¤্রাটের ছবি’ নামে তার একটি বিখ্যাত বই আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দেশ পত্রিকায় লিখেছেন ‘কেয়া আমি ও জার্মান মেজর’, যা মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য গল্প’।সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং শিল্পে তার অবদান নিয়েও বক্তব্য দেন ইমদাদুল হক মিলন।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর মাধ্যমে বাংলা ভাষা সারা পৃথিবীতে নতুন করে জাগ্রত হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘তাকে সম্মাননা জানাতে পেরে আমরা গর্বিত, আনন্দিত’।
বাংলা ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানুষকে সংগঠিত করায় গাফফার চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করেন নঈম নিজাম।গাফফার চৌধুরীকে সম্মাননা জানানোর প্রেক্ষিতে সাংবাদিকতার ৫০ বছরে বসুন্ধরা গ্রুপের হাউজের মতো স্বাধীনতা কোথাও দেখেননি উল্লেখ করে ডেইলি সান এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আমির হোসেন বলেন, এখানে কোনো হস্তক্ষেপ নেই, সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে যাই। বসুন্ধরা গ্র“পের কর্মকর্তা, বিশিষ্ট সাংবাদিকরাও সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post