একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি কিশোরগঞ্জের গাজী আবদুল মান্নান মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোর ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঁচপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় তিনি মারা যান।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির রাব্বানী মান্নানের বড় ছেলে আজিজুল হকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান।২০১৫ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই গাজী আবদুল মান্নান পলাতক ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের গাজী মান্নান, তাঁর দুই সহচরসহ চার রাজাকারের মৃত্যুদন্ড দেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় করিমগঞ্জে গাজী আবদুল মান্নান, এ টি এম নাছির, তাঁর ভাই শামছুদ্দিন আহমেদ, হাফিজউদ্দিন ও আজাহারুল ইসলাম এলাকাবাসীর কাছে ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক।হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ অসংখ্য অপরাধে লিপ্ত ছিলেন তাঁরা। উপজেলার বিদ্যানগর, আয়লা, ফতেরগোপ, কিরাটন ও পাশের এলাকায় নির্বিচারে হত্যা, লুট, অপহরণ, অগ্নিসংযোগের তা-ব চালান তাঁরা। বিদ্যানগর গ্রামেই হত্যা করা হয় আটজনকে।
২০১০ সালের ২ মে করিমগঞ্জ উপজেলার আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনের ছেলে গোলাপ মিয়া কিশোরগঞ্জের বিচারিক হাকিম ৬ নম্বর আদালতে একটি মামলা করেন। এ মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, নাসির উদ্দিন আহমেদ করিমগঞ্জ হাইস্কুলে পড়ার সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে তাঁর বাবা মিয়া হোসেনকে হত্যা করেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটির তদন্ত শুরু করে। মামলা দায়েরের পর ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা একাধিকবার সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান।দন্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় আদালতে।
Discussion about this post