হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর দাবির মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য অপসারণ করা হলেও সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনায় নির্মিত আর কোনো ভাস্কর্য অপসারণ করা হবে না বলছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সারা দেশ থেকে ভাস্কর্য অপসারণে হেফাজতে ইসলামের দাবির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী।শনিবার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনায় যে ভাস্কর্যগুলো বাংলাদেশের স্থাপিত হয়েছে, এই ভাস্কর্যগুলোর সাথে সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্যের কোনো সম্পর্ক নেই।যেগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্মৃতিজড়িত, এগুলো অপসারণ করার কোনো প্রশ্নই উঠে না। এসব ভাস্কর্য আছে এবং ভবিষ্যতেও সরকারি অনুদানে নির্মিত হবে- এব্যাপারে সরকার অনড় ও অটল অবস্থানে আছে।সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরিয়ে ফেলা হয়। যে হেফাজতে ইসলামের দাবিতে সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সমর্থনের পর সেটি সরানো হয় সেই হেফাজত ২০১১ সালে প্রথম প্রকাশ্যে আসে নারী নীতি বাতিলসহ ১৩ দাবিতে, যার মধ্যে সারা দেশের সব ভাস্কর্য অপসারণের দাবিও রয়েছে।
এরপর ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসা হেফাজতের দাবির প্রেক্ষাপটে চলতি বছরে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।এসবের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় মৌলবাদ আরও উৎসাহিত হবে বলে আশঙ্কার পাশাপাশি মৌলবাদীদের সঙ্গে সরকার আপস করছে বলেও বিভিন্ন মহলের অভিযোগ রয়েছে।তবে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যৌক্তিক নয় বলছেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারৃ যার অসীম সাহসের কারণে বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে- তার অবস্থান নিয়ে কথা বলা যৌক্তিক নয়। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে আত্মসমর্পণ করে না।পরিদর্শনে সময় মন্ত্রী আগামী রোজার ঈদকে সামনে রেখে জনভোগান্তি কমাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ ও মহাসড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।এসময় তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ছরোয়ার হোসেন, সোনারগাঁও থানার ওসি মঞ্জুর কাদের, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি শরিফুল আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।