কোটা সংস্কার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের এক কর্মসূচি থেকে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণার দাবি তোলা হয়েছে।শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ব্যানারে সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানদের যারা সরকারি চাকরিতে রয়েছে, তাদের বরখাস্তের দাবিও তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা।বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৫৫ শতাংশ কোটা রয়েছে, যা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে আন্দোলন চলছে ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।৫৫ শতাংশ কোটার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশ পদ তাদের সন্তানসহ উত্তরাধিকারদের জন্য সংরক্ষিত।এই কোটা না কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন,“রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাধীনতাবিরোধীদেরসম্পদ বাজেয়াপ্ত করাসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্তরসূরিদের সকল চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। এবং স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।একই সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখে বিসিএসের প্রিলিমিনারি থেকে তা কার্যকরের দাবি জানান তিনি।সাজ্জাদ বলেন, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করতে হবে। প্রিলিমিনারি থেকে কোটা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি। কোটা সংস্কারের আন্দোলন ঘিরে জামায়াত-শিবির সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে দাবি করা হয় সমাবেশে।
আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীন বলেন,আন্দোলনে চক্রান্তের মূলে ছিল জামায়াত-শিবির। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। তাদের অনেকে নিজেদেরকে প্রকাশ্যে রাজাকারের বাচ্চা হিসাবে ঘোষণা পর্যন্ত দিয়েছিল।এরপর থেকে এই রাজাকারের বাচ্চারা যেখানে দাঁড়াবে, তাদেরকে সেখানে প্রতিহত করা হবে। আর সহ্য করা হবে না।সমাবেশে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, কোটা সিস্টেমে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নারীদের অবদানে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে পেরেছে। নারীদের এগিয়ে নেওয়া এবং পিছিয়ে পড়াদের অগ্রসর করার জন্য জেলা কোটার ব্যবস্থা করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন কোটা প্রথা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, আমরা এখানে করুণা নিতে আসিনি। আমাদের পরিবারের রক্তের অধিকার নিতে এসেছি। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের ষড়যন্ত্র আমরা বানচাল করে দেব।মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদি হাসান বলেন, প্রিলিমিনারি থেকে কোটার বাস্তবায়ন আমরা চাই। কোটার বিপরীতে যেসব শূন্য পদ আছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।সমাবেশে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন, দপ্তর সম্পাদক আহমাদ রাসেল বক্তব্য দেন।