প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা থাকলেই শুধু আন্দোলন। তাই কোটার দরকার নেই। কোটা না থাকলে আন্দোলন নেই, সংস্কারও নেই। তিনি বলেন, যদি কেউ কোটা চায়, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখা হবে কী করা যায়? এরপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেওয়া হবে না।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন। আজ বুধবার বিকেল চারটায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে তাঁর সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সফরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য ছিল। লিখিত বক্তব্যের পর তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিই যখন কোটা চায় না, তখন কোটা রেখে লাভ আছে? সে জন্য আমি বলছি, কোটা থাকলে শুধু আন্দোলন। তাহলে আর কোটার দরকারই নাই, আন্দোলনও নাই, সংস্কারও নাই। যখন আমি বললাম কোটা থাকবে না, তখন বলে বাতিল না সংস্কার চাচ্ছি। আগে চাইল বাতিল, এরপর চাইল সংস্কার। কারণ কী? কোটা যদি না থাকে, তাহলে সংস্কারের প্রশ্ন উঠবে না। যদি কারও কোটা চাই, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখব কী করা যায়? এপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেব না।’
প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা বা অনগ্রসর, তাদের জন্য জাতির জনক কোটাপদ্ধতি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। কোটা যদি পূরণ না হয়, এর জন্য আন্দোলন লাগেনি। যখনই কোটা পূরণ হতো না, আমি প্রতিবছর কোটা রিলাক্স করে দিতাম। তারপর একবার বললাম যে বারবার না এনে এটাকে একটা স্ট্যান্ডার্ড নিয়ম দাঁড় করে ফেলো। যেখানে কোটা পূরণ না হবে, জায়গা যেন ফাঁকা না থাকে, সেখানে তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। সেভাবে কিন্তু চলছিল। এরই মধ্যে এল আন্দোলন।’ এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ছাত্রী হল থেকে ছাত্রীদের বেরিয়ে আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কারও মুখাপেক্ষী হয়ে রাজনীতি করে না। কে সমর্থন করবে আর কে সমর্থন করবে না, সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়। তাঁর দলের জোর হচ্ছে দেশের জনগণ। জনগণের সমর্থন আছে কি না, জনগণ চায় কি না, ভোট দেবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশকে সমর্থন না দিতে। তিনি কেন, বিএনপি যাচ্ছে, সবাই যাচ্ছে। যেয়ে তো অনুরোধ করে আসছে। এখন কে সমর্থন করবে আর কে সমর্থন করবে না, বা বাইরের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে আমরা রাজনীতি করি না।’