একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবীণ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার কুলদ্বীপ সিং চাঁদপুরী আর নেই। আজ শনিবার সকালে ভারতের চান্দিগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহসিকতা পুরস্কার মহাবীর চক্র জয়ী অকুতোভয় এই সেনাসদস্য মোহালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় মারা যান তিনি। তার ছেলে হারদ্বীপ সিং চাঁদপুরী বলেছেন, পরিবারের অন্য সদস্যরা জার্মানি থেকে ফেরার পর তার বাবার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৭১ সালে ৫ ও ৬ ডিসেম্বরের রাতে রামগড়ের লংওয়ালা দখলের উদ্দেশে টি-৫৯ রেজিমেন্ট ও শেরম্যান ট্যাংকের সহায়তায় পাকিস্তানের ৫১ পদাতিক ডিভিশন ভয়াবহ হামলা চালায়। তৎকালীন মেজর ব্রিগেডিয়ার কুলদ্বীপ সিং চাঁদপুরী নেতৃত্বাধীন ২৩ পাঞ্জাবের কোম্পানি ‘এ’ ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
পাকিস্তানের ৫১ পদাতিক ডিভিশন লক্ষ্য করে রাতভর একাধিক হামলা পরিচালনা করে কোম্পানি ‘এ’। একাত্তরের ৫ ডিসেম্বর ভোরে পাক বাহিনীর হামলার আগেই শত্রুপক্ষের সব ট্যাঙ্ক গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনী।
লংওয়ালার এই লড়াইয়ের ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা জেপি দত্ত ‘বর্ডার’ নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করেন। এই সিনেমায় ব্রিগেডিয়ার চাঁদপুরীর ভূমিকায় অভিনয় করেন সানি দেওল। এতে তাকে দেখা যায় ব্যতিক্রমী এক সাহসী লড়াকু ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সেনা কর্মকর্তা হিসেবে।
সিনেমার যুদ্ধের এক দৃশ্যে দেখা যায়, এক বাঙ্কার থেকে আরেক বাঙ্কারে নিজের ইউনিটের সদস্যদের এগিয়ে নিয়ে শত্রুকে পরাজিত করার অসাধারণ সাহসী সিদ্ধান্ত নেন চাঁদপুরী। তার এই ইউনিটের আক্রমণে শত্রুপক্ষ পিছু হঠতে বাধ্য হয় সেদিন। পাকিস্তানি সেনারা ১২টি ট্যাঙ্ক রেখে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়। ব্যাপক হতাহত হয় পাক শিবিরে।