যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসের শুরুতে দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদগুলোতে দেশের সমৃদ্ধি ও কল্যাণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাদের স্বাগত জানান।
মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনীপ্রধান এডমিরাল আবু মোজাফ্ফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী এবং বিমানবাহিনীপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীপ্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। তিনি তাদের হাতে সম্মানী চেক ও উপহার তুলে দেন। এ ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে ৯ জন সেনা, ২ জন নৌ এবং বিমানবাহিনীর ৩ জন সদস্যকে ২০১৮-২০১৯ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করা হয়। ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নিকটাত্মীয়সহ ১০১ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক (অব), সেনাবাহিনীপ্রধান, নৌবাহিনীপ্রধান, বিমানবাহিনীপ্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনীপ্রধান, নৌবাহিনীপ্রধান ও বিমানবাহিনীপ্রধান এদিন দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীপ্রধান নৌবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন।
এ ছাড়া বিমানবাহিনীপ্রধান আজ শুক্রবার বিমানবাহিনীর এবং সেনাবাহিনীপ্রধান আগামী সোমবার সেনাবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সম্মানে পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
