রাজাকারদের বিতর্কিত তালিকা প্রকাশ করা নিয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ সময় তাদের প্রশ্নবানে সংসদে খানিকটা তোপের মুখে পড়েন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আজ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় চার জন সাংসদ রাজাকারের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেই এই কথাটি সরাসরি বলা যায় না। কারণ ওই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যার কাছ থেকেই তথ্য নেন, এটা সঠিক আছে কি না-এটা দেখার দায়িত্ব এই মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায়। কিছু কিছু জায়গায় অসঙ্গতির কারণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। প্রকৃত রাজাকাররা এই লিস্টে আসেনি।’
জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগেই দুঃখ প্রকাশ করে সেই তালিকা প্রত্যাহার করে নিয়েছি, ভুলত্রুটি ছিল বলেই। ভবিষতে যাতে আর ভুলত্রুটির পুনরাবৃতি না হয়, সেই জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা নিয়ে এবং সম্পূর্ণরূপে যাচাই-বাছাই করেই ভবিষ্যতে তালিকা প্রকাশ করব।’
সরকার দলীয় আরেক সদস্য মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজাকের তালিকা প্রশ্নের মধ্যেই ভুল আছে, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল আমরা কোনো তালিকা তৈরি করব না। আমাদের লক্ষ্য ছিল যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তাদের যে তালিকা বিদ্যমান আছে সেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সংসদীয় কমিটিতেও সেই সিদ্ধান্ত ছিল। মন্ত্রী বলেছেন যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করেনি, করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি দিয়েছে সেটা আমরা জানি না, যেহেতু মালিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাই তারাই তো প্রকাশ করতে পারত, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী কেন সেটা প্রকাশ করলেন? উনি সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে পারেননি, উনি পারবেনও না।’
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে আমি এই কথাই বলেছিলাম। আমরা কোনো তালিকা তৈরি করব না, প্রকাশ করব। ঘটনাটাও তাই হয়েছে। আমরা যেটা পেয়েছি সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রণয়ন করেনি, তাদের কাছে যা সংরক্ষিত ছিল তাই দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমস্ত ডকুমেন্ট সংরক্ষিত ছিল এবং সেখান থেকেই যে তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে তাই আমরা প্রকাশ করেছি। তালিকায় যাদের নাম দিয়েছি তারা সক্রিয় ছিল কি না, তা শুধু যাচাই করার ব্যাপার। উনাদের নাম যে তালিকাতে আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সমস্ত ডকুমেন্টারি এভিডেন্স আছে। আমার যেটা অভিজ্ঞতা হয়েছে, তালিকা করতে তখন মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে চাওয়া হয়েছে, কারা কী করে? তারা সমানে তাদের অজ্ঞাতেই অনেকের নাম দিয়েছে। হয়তো সেজন্যই এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাচাই-বাছাই করেই তালিকা প্রকাশ করব।’