২০০২ সালে মৃত্যুবরন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির অন্যতম সদস্য আবুল কালাম আজাদ।
তিন সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে তিনি মারা যান। পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন ঢাকা শান্তিনগর চৌরাস্তা সংলগ্ন বাড়িতে। ১৯৬৯ সালে পিতা জাফর আলীর করা দলিল অনুযায়ী উত্তরাধিকারসূত্রে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ সম্পত্তির মালিক হন।
খুব জৌলুস পূর্ণ অবস্হায় তিনি ছিলেন না। তবে পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতেই ছিলেন। জীবিত থাকাকালীন সম্পত্তির খাজনা বিদ্যুৎ পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করেছেন। তার মৃত্যুর পর নাবালক বাচ্চাদের সম্পত্তির উপর দৃষ্টি পড়ে জনৈক শামীম আনসারি গং এর। তারা নকল কাগজ পত্র তৈরী করে আদালতের কাছ থেকে একটি একতরফা রায় নেয়। এবং পৈতৃক ভিটা থেকে জোর জুলুম করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে উচ্ছেদ করে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে আর কোন অভিভাবক না থাকায় কোন প্রকার বাঁধা দিতে পারেনি। হুমকির মুখে পালিয়ে কোন রকমে প্রাণ বাঁচে পরিবারটি।
এদিকে আনসারি গং রাতারাতি ঐ জায়গাতে দশ তলা ভবন তৈরী করে। বর্তমানে পপুলার ডায়াগানস্টিক নতুন শাখা শান্তিনগরের কাছে ভাড়া দেয় এবং নিজে ভবনটির চতুর্থ তলায় বসবাস শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা এমন কোন ব্যক্তি নাই যাদের কাছে সাহায্যের জন্য যায়নি। সবাই সহমর্মিতা দেখিয়েছে কিন্তু আগায়নি কেউ। মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মারা যান ২০১২ সালে। সম্পূর্ণ অসহায় এতিম পরিবারটি কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে থাকে। সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সবার কাছেই গেছে আবুল কালাম আজাদের সন্তানেরা। সবাই জমির কাগজ দেখে বুঝেছে যে তাদের সাথে অন্যায় হয়েছে। আদালতে রায়ের কারনে কেউ আগায়নি।
জমি আদায়ে মামলা করেছে তার সন্তানেরা। অর্থাভাবে মামলা পরিচালনায় কষ্ট হয়। তাদের একটাই দাবী বিত্তবান দুষ্ট জমি দখলকারী আনসারী গংদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যেন রায় না দেয়া হয়। তাদের এবং সকল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কথা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যদি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিপদে পাশে না দাড়াতে পারে তবে সেই সংগঠনের কি প্রয়োজন। দেশ এবং সরকারের কাছে জীবনের নিরাপত্তা ও পৈতৃক ভিটায় ফেরৎ যেতে চায় আবুল কালাম আজাদের পরিবার।
Discussion about this post