কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সুলতানের ষড়যন্ত্রে পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কক্সবাজারের একমাত্র বীর প্রতীক কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম নুরুল হক। রবিবার বিকেল ৪টায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেছেন।
লিখিত বক্তব্য প্রদানকালে তিনি আরো বলেন, ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতানের সাথে আমার পরিবারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চেয়ারম্যান টিপু আমার ছেলেকে ইয়াবা লুটকারী হিসেবে একটি পত্রিকায় বক্তব্য দেন। যেটি আমার পরিবারের সম্মানহানিকর ও বিব্রতকর।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে ১ লাখ পিস ইয়াবা লুটের তথ্য চেয়ারম্যান টিপু কিভাবে পেলেন ? অথচ ঐদিন আমার সেজ ছেলে খোরশেদুল হক কক্সবাজার সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকা থেকে পিএমখালী এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী করিম ও উখিয়ার কোটবাজার এলাকার হেলালকে ২ পিস ইয়াবাসহ হাতে নাতে ধরেন। এ দু’জন ২জন ইয়াবা ব্যবসায়ী বা ইয়াবা ক্রেতাদের লেনদেনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচারের করেন খোরশেদ। যা সাথে সাথে তোলপাড় শুরু হয়।
কিন্তু অত্যান্ত দু:খের বিষয় একই দিনে রাত ৯টায় ৩৬ মিনিটের সময় দৈনিক পূর্বকোণে কক্সবাজার জেলার প্রতিনিধির বরাত দিয়ে “ফের ইয়াবা লুটের ঘটনা;কক্সবাজারে চলছে তোলপাড়” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। যেখানে আমার ছেলে খোরশেদুল হককে ১ লাখ পিস ইয়াবা লুটকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ভোর ৪ টায় আমার বাড়ীতে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। আমি বিষয়টি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়কে অবগত করি। পুলিশের অভিযান চালনাকালীন সময় ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সুলতান রহস্যজনকভাবে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীদের বিভিন্ন বানোয়াট কথা রটনার মাধ্যমে নেতৃত্ব দেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে পুলিশ আমার বাসা তল্লাশী চালিয়েছে। অথচ ইয়াবা তো দূরের কথা, কোনো ধরনের অবৈধ জিনিস উদ্ধার করতে পারে নি। তারপরও আমার ছেলেকে আটক করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তাৎক্ষনিকভাবে আমি পুলিশ সুপারকে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে স্থানীয় চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রের কথা জানালে তিনি ঘটনার সুষ্টু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার আশ্বাস দেন।
পরে পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে আমার ছেলে খোরশেদুল হক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনভাবে জড়িত ছিলেন তা প্রমাণ পায়নি। যার কারণে আমার ছেলেকে স্ব-সম্মানে থানা হাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশের সুষ্ঠু তদন্তে আমি পুলিশ কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, আমি আজ জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে দাড়িয়েছি। আজ আমি শঙ্কিত, আজ আমি স্তব্দ, আমি অতিষ্ট ও মর্মাহত। তাই পরিবারের মান-ইজ্জত,আত্মসম্মান রক্ষার্থে আপনাদের সামনে এসেছি। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টিপু চেয়ারম্যান ধারাবাহিকভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ পুলিশ প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। এই স্বাধীন দেশে আজ আমি এবং আমার পরিবার একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কারণে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি । এভাবে টিপু চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্র চলতে থাকলে যেকোনো সময় মিথ্যা অপবাদ হামলা-মামলার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষার্থে তিনি মর্মাহত ভাবে আকুল হৃদয়ে সাংবাদিক ও প্রশাসনসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
Discussion about this post