মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৩৮ ধরনের সেবা ডিজিটাল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।
এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্তকরণ, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা প্রাপ্তি, মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও তথ্য সংশোধন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পুস্তক প্রাপ্তি, মুক্তিযুদ্ধের সাময়িক সনদ প্রদান, রেজিস্টার সংশোধন, চিকিৎসাসেবা দান স্কিমের আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে চিকিৎসা সেবা প্রদান, পিআরএল এবং ল্যাম্পগ্রান্ট অনুমোদন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান স্কলারশিপ স্কিমের আওতায় ছাত্রবৃত্তিসহ ৩৮ ধরনের সেবা ‘মাইগভ’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পাবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মাইগভ প্ল্যাটফর্মে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথম মন্ত্রণালয় হিসেবে কার্যক্রম শুরুর সম্মান অর্জন করায় আমরা আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ২০০৮ সালে তারই সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেবার মান বৃদ্ধি পাবে এবং কষ্ট করে আর সেবার জন্য ঘুরতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সব মুক্তিযোদ্ধার ভাতা অনলাইনে দিতে একটি প্রকল্প চলছে। এক লাখ ৯১ হাজার ৮৯৮ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে এক লাখ ৬০ হাজার জনকে এন্ট্রি করা হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে শতভাগ হয়ে যাবে। আজকে আমরা সব সার্ভিস তথ্য প্রযুক্তির মধ্যে নিয়ে আসছি। এটা কিন্তু কম কথা নয়। তুলনা করেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে দেখেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে আমরা এগিয়ে আছি। আমাদের সবকিছু ঠিকঠাক করা আছে, সেই অনুযায়ী আমরা এগোচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, একই সঙ্গে সময় নির্ধারণ করা আছে, কখন কোন কাজটা শেষ করব।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা ৩৮টি সেবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অ্যাভেইলঅ্যাবেল করছি। মাইগভ নামে একটি প্ল্যাটফর্মে অ্যাপ্লিকেশনগুলো থাকবে। মাইগভটা হচ্ছে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশনটি মোবাইল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে সব মন্ত্রণালয় মিলে প্রায় ১৭৮টি সেবা ডিজিটাল হয়েছে। আজকে একটি মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৩৮টি সেবা যুক্ত হতে চলেছে।’
দেশ থেকে অনিয়ম দুর্নীতি সন্ত্রাস সব ধরনের অনিয়ম বিশৃঙ্খলা দূর করার জন্য প্রযুক্তি আমাদের একমাত্র হাতিয়ার বলেও জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৬০০ সার্ভিস ডিজিটালাইজ হয়েছে। আরও ২ হাজার ২০০ সেবা আমরা ২০২১ সালের মধ্যে চালু করতে চাই। সেক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সবাই সেটা অনুসরণ করবে এ প্রত্যাশা রাখছি। আমাদের পক্ষ থেকে যে সাপোর্টগুলো লাগবে আইসিটি বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং এটুআই টিম সব সময় আপনাদের পাশে আছি। আমরা একসঙ্গে মিলে কাজ করে সবাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ পরিণত করবো। শেখ হাসিনার যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য আমরা প্রযুক্তকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করব।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রচলিত ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি র্যাপিড ডিজিটালাইজেশনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রোগ্রাম বিদ্যমান সিস্টেমগুলো যেমন- পরিচয়, ই-নথি, একসেবা, বিএনডিএ, একপের সমন্বয়ে মাইগভ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা ব্যবহার করে র্যাপিড ডিজিটালাইজেশনের কাজ চলমান আছে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ বক্তব্য দেন।
Discussion about this post