রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এক মুক্তিযোদ্ধা এবং তার ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় দুই ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী বাদী হয়ে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। তার মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন, রামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক শোভন ও আবদুর রহিম।
গত ২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীর স্ত্রী পারুল বেগমের (৬৫) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে ইসাহাক আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা করেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন। পরে বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল ইসলাম তার মায়ের দাফনে অংশ নেন।
মৃত নারীর স্বজনদের অভিযোগ, কোমরের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে হার্টঅ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ চিকিৎসা করেনি। উল্টো এর প্রতিবাদ করলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিহতের ছেলে রাকিবুলকে মারধর করেছেন। বাধা দিতে গেলে তারা মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীকেও মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে এই কমিটি প্রত্যাখান করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। হাসপাতালে এক মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের প্রতিবাদে শনিবার সকালে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তা নিরপেক্ষ নয়। কারণ, কমিটির সবাই চিকিৎসক। তারা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির দাবি জানান।
এই মানববন্ধনের পরই মুক্তিযোদ্ধারা থানায় গিয়ে মামলা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এবং মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীর দুটি মামলারই তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা।
Discussion about this post