স্বাধীনতার পাঁচ দশক হতে চললেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলমান থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (৪ মার্চ) এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অসন্তুষ্টির কথা জানান।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমকে দেওয়া এক নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা এই রিটের শুনানিতে আদালত এই নোটিশের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। একই সঙ্গে এই নোটিশের কার্যকারিতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে, স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পরও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আমরা এখনও যাচাই-বাছাই করে চলেছি, যে তারা শ্রেষ্ঠজনক কিনা!
পরে আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের লাল মুক্তিবার্তায়, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রকাশিত গেজেট, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত সনদ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক সাময়িক সনদ এবং চূড়ান্ত তালিকায় কুমিল্লার হোমনা থানার মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম প্রধানের নাম রয়েছে। একাধারে তিনি হোমনা থানা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বলেও গেজেট রয়েছে। তবে এত কিছু থাকা সত্ত্বেও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমকে সশরীরে হাজির হয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দাখিল করতে নোটিশ পাঠান।
সে অনুযায়ী গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম হাজির হন। কিন্তু জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নোটিশের পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ মার্চ দিন নির্ধারণ করেন। পরে ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম।অমিত দাস গুপ্তের দাবি, সরকার গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের নাম প্রকাশ করার পরও মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে শুনানির জন্য ডেকে এনে শুনানি করতে পারেন না। কারণ, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেটে প্রকাশ করেছে। তারপরও নোটিশ দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হেনস্থা করা হয়েছে।