পটুয়াখালীর বাউফল থানার সামনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের পর ছাত্রদলের এক সাবেক নেতা ঢোল পিটিয়ে ফের তা দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৮ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে। ইউএনও বলেছেন, ওই জায়গা সরকারি। অপর দিকে দখলকারীর দাবি, ওটা তাদের নিজস্ব জায়গা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাউফল থানার সামনে ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ৩৮ শতাংশ জমির মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৮ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই জমিতে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৩৬ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের নেতৃত্বে কমপ্লেক্সের সামনের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের পর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সুলতান আহম্মেদের ছেলে ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আনোয়ার হোসেন লোকজন নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ফের ওই জায়গা দখল করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন।
ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, ওই জায়গা ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। ৮ শতাংশ জমি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আনোয়ার হোসেন যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের একটি আদেশের কপি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জায়গায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ওই আদেশে সৈয়দ আহম্মেদকে বিবাদী করা হলেও সরকারকে কোনও বিবাদী করা হয়নি। আদালতকে ভুল বুঝিয়ে এক তরফা একটি আদেশ নেওয়া হয়েছে। আমরা কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।
তবে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের দাবি, ‘৮৭ জেএলের ৪৭১ খতিয়ানের ১০৪০ নম্বর দাগের (হাল দাগ নম্বর বাটারা দাগ নম্বর ১) ১৮ শতাংশ জমির মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ জমির মালিক তিনি ও বাকি ১ দশমিক ৬ শতাংশ জমির মালিক মাইনুদ্দীন হাওলাদার। দীর্ঘদিন ধরে এ জায়গা বেদখল ছিল। আদালতের নির্দেশে আমাদের জায়গার দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের কোনও জায়গা দখল করিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুল আলম মিয়া বলেন, দখলকারীরা প্রকৃতপক্ষে দখলবাজ। তাদের কাজই হচ্ছে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অন্যের সম্পত্তি নিজের বলে দাবি করা। ১ নম্বর খাস খতিয়ান থেকে সরকার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৮ শতাংশ জমি বরাদ্দ দিয়েছে। ওই জমিতে বর্তমানে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে তারা আদালতের এক তরফা একটি আদেশ নিয়ে ওই জায়গা তাদের বলে দাবি করেছেন। এ বিষয়টি আদালতে ফয়সালা হবে বলে বলে জানান তিনি।
Discussion about this post