মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নির্যাতিত আরও ৬১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপসচিব রথীন্দ্র নাথ দত্তের স্বাক্ষরে গত সোমবার এ সংক্রান্তে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০০২ (২০০২ সনের ৮ নং আইন)-এর ৭ (ঝ) ধারা অনুযায়ী বীরাঙ্গনাদের এ স্বীকৃতি দেওয়া হলো। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনার সংখ্যা ৪০০ জনে দাঁড়াল। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের মতো অন্যান্য সব সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও মাসিক ভাতা পাবেন।
গত ২৯ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য আবেদন আহ্বান করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির মতামতসহ তা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। এ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, গবেষক, নারী সংগঠন, এনজিওর কাছে নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) সম্পর্কে তথ্য থাকলে তা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দিয়ে গেজেটভুক্তির কাজে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন-২০০২ এর ৭ (ঝ) ধারা অনুযায়ী প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা, সরকারের রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ এর সিডিউল-১-এর তালিকা ৪১ এর ৫ নম্বর ক্রমিকে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জামুকার ৭০তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) তালিকার গেজেট প্রকাশ করা হলো।
৬১ নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) হলেন মোসা. সিজু বেগম, বেগম আছকিরূন নেছা, আশালতা পাল, রেনুকা চক্রবর্তী, মোছা. রেনু বেগম (মৃত), সাহেরা বেগম, মোছা. জরিনা বিবি, মোসা. রোপন বেওয়া, মোছা. মোজেফা খাতুন, হাজেরা বেগম, ফুল বরু ওরফে ফুল বানু, মনোয়ারা বেগম, সালেহা বেগম, আনোয়ারা বেগম, ছৈতুন নেছা, রিজিয়া বেগম, মৃত জোবেদা, মৃত হাচেন ভানু, মৃত হাচন ভানু, মৃত জয়ফুল, মৃত ছকিনা খাতুন, মৃত ফুল ভানু, মোছা. মনোয়ারা বেগম, জমিলা বেগম, তুলসী চন্দনা রায়, রাহেলা বেগম, মোছা. মানিকজান, মোছা. হালিমা বেগম, মোছা. ইয়ারজান, মোছা. সমর্থভান, মোছা. রেখা বেগম, মোছা. হাজেরা বেগম, মোছা. হালিমা বেগম, মোছা. ছায়েরা খাতুন, মোছা. ফরিদা বেগম, মোছা. লাইলী বেগম, মোছা. ফাতেমা বেগম, আয়েশা বেগম, মোসা. সালেহা খাতুন, তরুন বালা, মায়া রানী সাহা, মোসা. হাজেরা বেগম, মোছা. সুফিয়া বেগম, মোছা. হোসনেয়ারা বেগম, জামিরুন নেছা, জয়নব বিবি, জয়তুন বেগম, হাজেরা বেগম, খুদেজা, রুকেয়া, মমতা, আলিপজান, রহিমা বেগম, নবিরুন বেগম, সিমন্তী রানী চন্দ, জোৎস্না বেগম, আসমা বেগম, মোছা. জামেনা খাতুন, আমেনা বেগম, সুমি বিশ্বাস ও গুরুদাসী মন্ডল।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রথীন্দ্র নাথ দত্ত এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
Discussion about this post