লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার উপজেলায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তিন পরিবারের বসতবাড়ির গাছপালা কেটে বাঁশের বেড়া দিয়ে ৪০ দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পরিবারগুলো। উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চর ঠাংঝাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করে এক মাসেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের কাছে বিচার দাবি করেছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ছেলে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, চর ঠাংঝাড়া গ্রামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মজিবর রহমানের (ইপিআর) ছেলে মো. মিজানুর রহমান ও তার মৃত ভাই মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল ও মোশারফের ৩০ শতক বসতবাড়ির গাছপালা কেটে ফেলেছেন প্রতিপক্ষ শহিদুল ইসলামের লোকজন। ওই তিন পরিবারকে চলাচলের সামান্য জায়গা দিয়ে বাড়ির চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন শহিদুল ইসলামের লোকজন।
জানা গেছে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানসহ তিন ভাইয়ের নামে রেকর্ড করা ৩০ শতক বসতবাড়িতে ১৯৬৬ সাল থেকে তারা বসবাস করছেন। ওই জমি একই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) বাবার সম্পত্তি দাবি করে লোকজন নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি গাছপালা কেটে বাড়ির চারদিকে বেড়া দেন। এতে বাঁধা দিতে গেলে ভুক্তভোগী পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার পরদিন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের ছেলে মো. মিজানুর রহমান হাতীবান্ধা থানায় আটজনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমিসহ আমার তিন ভাইয়ের নামে রেকর্ড করা বসতবাড়ির ৩০ শতক জমিতে শহিদুল ইসলামের লোকজন গাছপালা কেটে বাড়ির চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। আমাদের তিন পরিবারকে গৃহবন্দী করে রেখেছেন। আমাদের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি। আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি মোতাহার হোসেনে কাছে বিচার চাই। জায়গা-জমি বলতে বসতভিটে ছাড়া আমাদের কিছুই নেই।’
মিজানুরের স্ত্রী শিরিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের লাগানো ১৩টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে শহিদুল ইসলামের লোকজন। এ ছাড়া পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে গেছে। আমরা কিছুই বলিনি। এখন তাদের ভয়ে আমরা কিছুই বলতে পারছি না।’
অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা মৃত আব্দুল কাদেরের নামে ১৯৬২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী আমরা এই জমির মালিক। বিষয়টি নিয়ে আমরাও থানায় অভিযোগ করছি। দুই পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হলে সমাধান হবে।’ তিনি গাছ কাটা ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
হাতীবান্ধা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকলে এক পক্ষ আসেনি। বিষয়টি জমি সংক্রান্ত হওয়ায় আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। গাছপালা কাটার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post