দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ মার্চ: যথাযোগ্য মর্যাদা এবং উৎসব মুখর পরিবেশে বৃহষ্পতিবার সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে ৪৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।বহু কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছে গোটা জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া এবং মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে জাতি এবারের দিবসটি উদযাপন করছে।
সুদীর্ঘকালের সংগ্রাম, আপোষহীন আন্দোলন এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভ করে।প্রত্যুষে রাজধানীতে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।দিবনটি উপলক্ষে সকাল ছয়টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাগণ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি মিশনের কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।দিবসটি উপলক্ষে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।আজ সরকারি ছুটির দিন।সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোর সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কুচকাওয়াজসহ বিভিন্ন শরীরচর্চা প্রদর্শন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজে সালাম নেন।এর আগে সকাল সাতটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিদেবন করেন।
চট্টগ্রাম: মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মুক্তিসংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রামবাসী। দিবসের প্রথম পট্রহরে মঙ্গলবার রাত ১২ টা ১ মিনিটে পুলিশের একটি চৌকস দল শহীদ মিনারে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম মনজুর আলমের পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। মেয়রের পর সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো.আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম মাহজাবিন মোরশেদ, কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল, অতিরিক্ত কমিশনার একেএম শহীদুর রহমান ও বনজ কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে নগর পুলিশ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।এছাড়া প্রশাসনিক বিভিন্ন সংস্থার পক্ষে রেলওয়ে পুলিশ, আর আর এফ, শিল্প পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে সভাপতি নূরুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের নেতৃত্বে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদের নেতৃত্বে নগর যুবলীগ, সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু’র নেতৃত্বে নগর ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো শহীদ মিনার প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে উঠে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনার এবং এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ।
রাত ১১টা ৫০ মিনিটে কয়েকজন কাউন্সিলর নিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন বিএনপি সমর্থিত চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলম। শহীদ মিনারের মূল ফটকের সামনে আগে থেকেই দাঁড়িয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটির মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন।এম মনজুর আলম এসে আ জ ম নাছির উদ্দিনের সামনে দাঁড়ান। হাস্যোজ্জ্বল নাছির এম মনজুর আলমকে বলেন, আমি এতক্ষণ চিন্তা করছিলাম, সিটি কর্পোরেশন কোথায় ? সিটি কর্পোরেশন এসে গেছে।হাসিমুখে জবাব দেন মনজুর, আমি এসে গেছি। বলেই তিনি আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে করমর্দন করেন। এসময় দুই প্রার্থী আরও কিছুক্ষণ হাস্যরসে মেতে উঠেন। সেখানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা দুই প্রার্থীর হাস্যরস উপভোগ করেন।
রাজশাহী: বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজশাহীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতির সূর্য সন্তানদের স্মরণ করছেন সবাই।একই সঙ্গে বজ্র কণ্ঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে রাজশাহী জেলা প্রশাসন।বৃহস্পতিবার সূর্যদয়ের পর রাজশাহী পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। একই সময়ে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ভোর থেকে সব সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। নগরের হেতেম খাঁ বড় মসজিদে সকাল ৭টায় কোরআন খানি, দোয়া ও বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।সকাল ৮টায় রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হেলালুদ্দিন আহমদ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।পরে তারা বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, স্কাউটস ও বিএনসিসি’র সম্মিলিত কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সকাল সাড়ে ১১টায় শিল্পকলা একাডেমিতে নগরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বাদ জোহর মহানগরের সব মসজিদে জাতির অব্যাহত সুখ-শান্তি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।এছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে হাসপাতাল, কারাগার, শিশু সদনে।
অন্যদিকে, বিকেল ৩টায় উপহার সিনেমা হলে বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।বিকেল ৪টায় আয়োজন করা হয় রিভারভিউ কালেক্টরেট স্কুলে নারীদের ক্রীড়ানুষ্ঠান ও আলোচনা সভার। একই সময়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক একাদশ বনাম মুক্তিযোদ্ধা একাদশ এবং সাড়ে ৪টায় মেয়র একাদশ বনাম বিভাগীয় কমিশনার একাদশ এর মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা সাতটায় শিল্পকলা একাডেমিতে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।সন্ধ্যায় নগরের লক্ষ্মীপুর মোড় ও আলুপট্টি মোড়ে ছিল মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।এছাড়া মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনসমূহে বর্ণিল আলোক সজ্জিত করা হয়।
ময়মনসিংহ: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে ময়মনসিংহে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্কুল ঘাসফুল শিশু নিকেতন।বুধবার (২৫ মার্চ) রাতে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের সামাজিক সংগঠন হিউম্যানিটাস সোশ্যাল সার্ভিস সেন্টার পরিচালিত এ স্কুলের শিশুরা জয় বাংলা স্লোগানে আলোর মিছিলও করে।সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সামনে একাত্তরের স্মৃতিকথা তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজ উদ্দীন।এ সময় হিউম্যানিটাস সোশ্যাল সার্ভিস সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জামান পায়েল দ্রুব সত্য রায়, সাব্বির আহমেদ, আগাথা অন্যা মন্ডল, সামির, নাহিয়ান, দীপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট: মাতৃভূমির জন্য জীবন দেওয়া শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করলো সিলেটবাসী। স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে একাত্তরের সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ছিলো লোকারণ্য।ফুল হাতে সব বয়সী মানুষের গন্তব্য ছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। শহীদ মিনার বেদি ঢেকে যায় ফুলে ফুলে। এ সময় সবার মুখে ছিলো যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়।বুধবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন।একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ডের নেতা, বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিলেট শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, আর আর এফ কমান্ড্যান্ট, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ, সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার ভিডিপি, বন কর্মকর্তা, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও সিলেট প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, মহিলা আওয়ামী লীগ, জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বলেন, স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।শহীদ মিনার চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কলাপাড়া: বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কলাপাড়ায় মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, কলাপাড়া প্রেসক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, গণজাগরণ মঞ্চ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, মানিকমালা খেলাঘর আসর, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, নাগরিক উদ্যোগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য র্যালী, এমবি কলেজ মাঠে কুচকাওয়াজ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, মসজিদ-মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভাসহ ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে। কলাপাড়ার সর্বত্র দিনভর মুখর ছিল মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নিয়ে। অপরদিকে বুধবার রাতে গণজাগরণ মঞ্চ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও মানিকমালা খেলাঘর আসর মোমবাতি জ্বালিয়ে শহরে আলোর মিছিল করে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ঃঅসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা নিয়ে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২ টা ১ মিনিটি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।প্রত্যুষে গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন স্বাধীনতা ও বিজয় স্মৃতি স্তম্ভ চত্ত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচী। সকাল সাড়ে ৬ টায় স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন। এরপর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।এরপর সকাল ৮ টায় শহরের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত হয় কুচ্্কাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনী।স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্র, হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু পরিবার, শিশু নিবাস, এতিমখানা ও শিশু কেন্দ্রসমূহে পরিবেশন করা হয় উন্নতমানের খাবার। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় মসজিদ, মন্দির ও গীর্জাসহ বিভিন্ন উপসনালয়ে প্রার্থনা করা হয়। এদিকে, দশ হাজার ১টি মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে গোপালগঞ্জে ২৫ মার্চের কালো রাতে পাহানাদার বাহিনীর হাতে নিহত শহীদের স্মরণ করা হয়েছে। জেলা উদীচী সংসদের উদ্যেগে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে “আগুনের পরশ মনি……ছোয়াও প্রানের” এ গানের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এসময় জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।এ কর্মসূচীতে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেন। এসময় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দেশত্ববোধক গান পরিবেশন করেন উদীচী সংসদের শিল্পীরা। এর আগে ২৫ মার্চের কালো রাত উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী ইমদাদুল হক, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, অধ্যক্ষ মোঃ আবু হোসেন, খন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী, নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।এসময় বক্তরা, সম্প্রদায়িক ও জঙ্গি তৎপরতা থেকে দেশকে মুক্ত করে অসাম্প্রদায়িতকার চেতনায় পরিচালিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে পালন করছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন প্রত্যুষে স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক সংবলিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ৩১ বার তোপধ্বনীর মাধ্যমে দিবসটির শুভ সুচনা এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদদের স্মরণে ১মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সকাল ৮টায় পুরাতন জেলা ষ্টেডিয়ামে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্ল গাইডস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠনের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর ও পুলিশ সুপার বশির আহম্মদ। পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। এছাড়াও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাজাকারের ফাঁসি ডিসপ্লে করে।
কুমিল্লা: মহান স্বাধীনতার জন্য আতœদানদানকারী বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে এবং বিপুল আনন্দ উদ্দীপনা ও নানা কর্মসূচী পালনের মধ্যদিয়ে কুমিল্লায় পালিত হচ্ছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস । দিবসটি উপলক্ষে ২৬ মার্চ ভোরে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩১ বার তোপ ধ্বনি করা হয়। পরে শহীদ মিনারে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কুমিল্লা ৬ আসনের সংসদ সদস্য আকম বাহা উদ্দিন বাহার, জেলা পরিষদ প্রশাসক আলহাজ্ব ওমর ফারুক, জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল, পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজিবী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ। এসময় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় বিউগলের করুন সুর বেজে উঠে। পরে শহীদ মিনার থেকে শোভা যাত্রা করে সিটি কর্পোরেশন পার্কে বঙ্গবন্ধুর নবনির্মিত ম্যুরাল পাদদেশে সবাই উপস্থিত হয়। এখানে ম্যুরালের উদ্বোধন করেন কুমিল্লা ৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহার। এসময় ম্যুরালে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে কুমিল্লা ষ্টেডিয়ামে শিশু কিশোর স্কাউট,গার্লস গাইড ক্যাডেটদের কুচকাওয়াচ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দুপুরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সংবর্ধনার অয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ।
গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি: সারা দেশের ন্যায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বরিশালের গৌরনদীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন বর্নাঢ্য র্যালী বের করে। শেষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হাসান পাটোয়াÍীর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র হারিছুর রহমান হারিছ।
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ): বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় সিংগাইরে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেন। সকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংসদ কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করেন। এছাড়া বিএনপি, উপজেলা প্রশাসন, ডোনার এসোসিয়েশন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পৌরসভাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করা হয়। সকাল ১০ টায় সিংগাইর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, সিংগাইর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদুল ইসলাম। বিকালে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় উপজেলা পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
পাবনা ঃ যথাযথ মর্যাদা আর ভাবগাম্ভীয়ের মধ্যদিয়ে পাবনায় সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন উদযাপন করেছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসের রাত ১২.০১ মিনিটেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ দূর্জয় পাবনাতে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শুরু করা হয়। শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়। সকাল থেকেই শোভাযাত্রা নিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণের পর স্বস্ব প্রতিষ্ঠানে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। দূর্জয় পাবনায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পাবনা প্রেসক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামীলীগ, বিএনপি, গণফ্রণ্ট, জাসদ, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, বনমালী শিল্পকলা, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী, রোটারী ক্লাব অব রূপকথা, জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, পৌরসভা, সদর উপজেলা পরিষদ, এলজিইডি, জেলা ইলেক্ট্রনিক্স অ্যা- ইলেক্ট্রিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে পাবনা প্রেস ক্লাব আলোচনা সভা, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অন্ত:কক্ষ ক্রীড়ানুষ্ঠানে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণসহ ২ দিনের কর্মসূচী গ্রহণ করে। এদিকে দিবস উপলক্ষে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজন করে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা। দিবসের প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা চত্বরে শহিদ বীরমুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডীন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম, প্রক্টর আওয়াল কবির জয়, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, ডীন মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল আলীম, বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোষ্ট রাশেদ কবির, ডীন ড. খালেদ ইকবাল চৌধুরী, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী। শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
পটুয়াখালী: যথাযোগ্য মর্যাদায় পটুয়াখালীতে পালিত হচ্ছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শহীদদের স্মৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পনের মাধ্যমে দিবসের শুভ সুচনা। আজ সকালে জেলা সার্কিট হাউস থেকে জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে বর্নাঢ্য র্যালী বের হয়ে মুক্তিযোদ্ধা স্মতি সৌধে এসে শেষ হয় । প্রথমে জেলা প্রশাসক শহীদের স্মৃতিতে পুস্পার্ঘ অর্পন করেন পরে জেলা পুলিশ সুপার, জেলা আওয়ামীলীগ, পৌর মেয়র এবং জেলা বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ স্কুল, কলেজ, এনজিও প্রতিনিধিরা শহীদের স্মৃতিতে ফুল দেয়। জেলা প্রসাশনের উদ্যেগে আজ পটুয়াখালীতে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আবুল কাশেম স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ।
নারায়ণগঞ্জ : মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নারায়গঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্দ্যোগে শহরের মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় নগরীর দুই নং রেল গেট এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামানে সমাবেশ করে। বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী নুরদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির নেতা এডভোকেট আব্দুল বারি, এডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর আহমেদ, বন্দর নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের নিয়ে নগরীর চাষাঢ়ার দিকে যাওয়ার পথে দুই নং রেলগেট এলাকায় এলে পুলিশ বাধা দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। পরে মিছিলকারিরা মন্ডলপাড়া ঘুরে পুনরায় বিএনপির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। সমাবেশ বক্তারা বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা দিয়ে হররানি করা হচ্ছে। মামলা দিয়ে নির্যাতন চালিয়ে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম বন্ধ করা যাবে না
বরিশাল: নগরীতে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে। সূর্যোদয়ের আগে ৩১-বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসটির সূচনা হয়।এছাড়া বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাতে দিনভর নানা কর্মসূচি চলছে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. হুমায়ুন কবির, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শৈবাল কান্তি চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল আলম, পুলিশ সুপার একেএম এহেসান উল্লাহসহ অনান্য কর্মকর্তাগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বধ্যভূমির উদ্দেশ্যে পদযাত্রা ও পুস্পার্ঘ নিবেদন করা হয়।এর পরে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস।এছাড়াও লেডিস ক্লাবে জেলা প্রশাসন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনার আয়োজন করে। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে প্রতিবছরের মত এবারও মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে রয়েছে শিশুদের চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা। মহানগর আওয়ামী লীগ সন্ধ্যায় দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করবে ।সন্ধ্যা ৭টায় অশ্বিনী কুমার টাউন হলে সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যেগে চলছে দিনভর নানা অনুষ্ঠান।
যশোর :যশোরে বিজয় স্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মহান স্বাধীনতা দিবস। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় শহরের মনিহার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিজয় স্তম্ভে ফুল দেন জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর। এরপর পুলিশ সুপার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সকাল ৯টায় যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় কুচকাওয়াজ ও মনোজ্ঞ ডিসপ্লে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে।
রংপুর অফিসঃ রংপুরে যথাযত মর্যাদায় সারা দেশের ন্যায় ৪৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানিয়ে রাত ১২টা ৩০ মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনি মধ্য দিয়ে দিবসটির সুচনা হয়। রংপুরে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে দিবসের প্রথম প্রহরে রংপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিটি মেয়র সরফউদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফুল দিয়ে অপর দিকে বিভাগীয়, জেলা ও রংপুর প্রেস ক্লাব, শহর আ’লীগ, জাপা, বিএনপি, ওয়ার্কাস পাটি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচাসেবী সংগঠন শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও জেলা স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার জসিম উদ্দিন আহম্মেদ সালাম গ্রহণের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে, খেলাধুলাসহ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে রংপুর সাহিত্য ও সাং¯ৃ‹তিক পরিষদ দেশের গানের আয়োজন করেন। এছাড়াও রংপুর সরকারি কলেজ, বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাধা কৃষ্ণপুর ডিগ্রী কলেজ, ক্যান্ট পাবলিক কলেজ, মেডিকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো পৃথক পৃথক ভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেন। অপর দিকে সেনা বাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে সেনানিবাসে ব্যতিক্রম ধর্মী এক গলফ্ খেলার আয়োজন করেন। মহানগরী গ্রান্ট হোটেল মোড় ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসুচি পালন করা হয়। এর রক্তদান কর্মসুচির উদ্বোধন করেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রান্সফিশন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার মোঃ সাইফুর রহমান ও ডাক্তার মোঃ শাহাজান মিয়া ও সময় উপস্থিত ছিলেন উক্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ রহমান লাবলু। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভাগী লেখক পরিষদ রংপুরে কর্মসুচি পালন করেছে।