দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ এপ্রিল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে যে কোন দিন রায় ঘোষণার (সিএভি) জন্য রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ আদেশ দেয়।এটি ট্রাইব্যুনালে ১৮ তম মামলা যা বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণার পর্যায়ে পৌঁছল। এর আগে পৃথক দুটি ট্রাইব্যুনালে আরো ১৭ মামলার রায় ঘোষনা করা হয়েছে। বিচারিক কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল-১এ ৮টি ও ট্রাইব্যুনাল-২ এ ৯টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।এ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী ও আবুল কালাম আজাদ। অপরদিকে আসামিপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান যুক্তিতর্ক পেশ করেন।রাজাকার পলাতক হাছেন আলীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সুনির্দিষ্ট ৬টি ঘটনায় গত ১১ নভেম্বর অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। গতবছর ৭ ডিসেম্বর এ আসামির বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত হাসান আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা হরি দেবনাথসহ প্রসিকিউশনের মোট ২৬ জন সাক্ষী। অন্যদিকে আসামির পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিলেন না।
গত ১৫সেপ্টেম্বর হাসান আলীর অনুপস্থিতিতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আব্দুস শুকুর খানকে রাষ্ট্রীয় খরচে আসামিপক্ষের আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়।গত ২৪ আগস্ট হাসান আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে পলাতক এ রাজাকার কমান্ডারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। পরে তাকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেয় প্রসিকিউশন। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনের ৬টি অভিযোগ আনা হয়। এতে ২৪ জনকে হত্যা, ১২ জনকে অপহরণ ও আটক এবং ১২৫টি ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন হাসান আলী। সে সময় তিনি তাড়াইল থানা এলাকায় রাজাকারের দারোগা’ নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাছিহাতা গ্রামে বসবাস করছেন। তদন্তের স্বার্থে আনা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে গত ৩ এপ্রিল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।