দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ৩০ অক্টোবর ২০১৫: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানারদের সাথে একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্বের ভূমিকা পালনকারী এম.এ রব আজো পূর্ণবাসিত হয়নি। স্বাধীনতার ৪৪বছর পর আজো পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি অপরের বাড়িতে আশ্রিতা হিসেবে বসবাস করে আসছেন।বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আনসার কমান্ডার এম.এ রব (৬০) বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল মুহুর্তে (২১ অক্টোবর সন্ধ্যায়) গৌরনদীর বাটাজোর নামকস্থানে এ্যাম্বুসে থাকা পানহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধা নিজাম বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। সারারাত ওই যুদ্ধের পর ভোরে যুদ্ধস্থানে যাওয়ার পরে দেখতে পাই সাতজন পাকসেনা রাতের যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।
রাতের যুদ্ধে পরাস্থ হয়ে ভোরে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় গভীর জঙ্গল থেকে অস্ত্রবিহীন তিনজন পাক সেনা সুবেদার শরীফ খান বেলুচী, সিপাহী নাসির খান বিহারী ও সিপাহী ফিরোজ খানকে (পাঞ্জাবী) আমি হাতেনাতে আটক করেছিলাম। পরে তাদের (পাক সেনাদের) স্বীকারোক্তি মতে বাটাজোর সিএন্ডবি রোডের সন্নিকটে থেকে তিনটি ব্যাটাগান ও কিছু গুলি উদ্ধার করেছিলাম। তিনি আরও বলেন, আনসার বাহিনীর একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরবর্তী সময় থেকে শেষপর্যন্ত আমি নয়টিস্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আবেগআপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, জীবন বাঁজি রেখে সেদিন পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে বিজয় পতাকা ছিনিয়ে আনলেও স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর আজো আমি রয়েছি অন্যের ঘরে আশ্রিত। ধানডোবা গ্রামের তার মামা মৃত হারেজ মোল্লার বসত ঘরের একটি বারান্দায় ৫ সদস্যর পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি বসবাস করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারীর দেয়া এক প্রত্যয়নপত্রে জানা গেছে, দক্ষ আনসার কমান্ডার আব্দুর রব চলতি বছরের ৫ ফেব্র“য়ারির পরবর্তী সময় থেকে জননিরাপত্তায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ৩নং ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১০টি ক্যাম্পে তীক্ষè নজর রেখে ব্যাপক সফলতা ও সুনাম অর্জন করেছেন। তার এ সাহসী ও প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আনসার বাহিনীর জেলা সমাবেশে তাকে (এম.এ রব) সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জীবন সায়ান্সে পরাজিত এ দক্ষ সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আনসার কমান্ডারকে আজীবন সম্মাননা এবং তার পূর্ণবাসনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর সুপারিশ করেন।
Discussion about this post