মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের নির্বাহী আদেশ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন যেকোনো সময়ে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কারা কর্মকর্তারা।কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেলার নাশির আহমেদ শনিবার বিকেলে প বলেছেন, ফাঁসি কার্যকরের জন্য যে নির্বাহী আদেশ প্রয়োজন, তা কাশিমপুর কারাগারে এসেছে।সূত্রমতে, ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছে। যেকোনো সময়েই তা কার্যকর হতে পারে। পরিবারের স্বজনদেরও দেখা করতে ডেকেছে কারা কর্তৃপক্ষ। বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ছয়টি গাড়িতে মীর কাসেম আলীর পরিবারের ৪০ থেকে ৪৫ জন সদস্যকে কারাগারে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তাঁরা এখনো কারাগারের ভেতরে অবস্থান করছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর পরিবারের লোকজন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন। শনিবার বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ছয়টি গাড়িতে কাসেম আলীর পরিবারের ৪০ থেকে ৪৫ জন সদস্যকে কারাগারে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।এর আগে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর পরিবারকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কারাগারে ডাকে কারা কর্তৃপক্ষ।সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে এবং বিশেষ করে কারা ফটকের সামনে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকে এবং সাদাপোশাকে কাজ করছেন গোয়েন্দারা। কারা ফটকেও তল্লাশি করে নিয়মিত দর্শনার্থীদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ৪০ নম্বর কনডেম সেলে রাখা হয়েছে মীর কাসেমকে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার শর্ত দিয়ে দুই দিন কাটানোর পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না বলে গতকাল শুক্রবার সিদ্ধান্ত জানান মীর কাসেম আলী। তাঁর ফাঁসি কার্যকরে এখন আর কোনো বাধা নেই। এখন যেকোনো সময়ে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি হতে পারে বলে জানান কারা কর্মকর্তারা।
কারা কর্তৃপক্ষের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শুক্রবার বলেছিলেন, শনিবার রাতে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করার মতো প্রস্তুতি তাঁদের রয়েছে।কাশিমপুর কারাগারেই ফাঁসি কার্যকর করা হবে। মানবতাবিরোধী অন্য আসামিদের মৃত্যুদন্ড যেভাবে কার্যকর করা হয়েছে, ওই প্রক্রিয়ায় মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হবে। ফাঁসি কার্যকরের আগে মীর কাসেম আলীর স্বজনেরা তাঁর সঙ্গে একবার দেখা করার সুযোগ পাবেন। এ জন্য কারা কর্তৃপক্ষই তাঁদের ডেকে পাঠাবে।মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ে রিভিউ আবেদনই ছিল শেষ ধাপ। গত বুধবার মীর কাসেমের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওই দিনই মীর কাসেমের পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। সাজাপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন জানান, কারা কর্তৃপক্ষ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁদের দেখা করার জন্য ডাকেন।শনিবার সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে এবং বিশেষ করে কারা ফটকের সামনে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকে এবং সাদাপোশাকে কাজ করছেন গোয়েন্দারা। কারা ফটকেও তল্লাশি করে নিয়মিত দর্শনার্থীদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ৪০ নম্বর কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে মীর কাসেমকে।
ছেলেকে ফিরে পাওয়ার শর্ত দিয়ে দুই দিন কাটানোর পর গতকাল শুক্রবার মীর কাসেম আলী জানান, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না।মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ে রিভিউ আবেদনই ছিল শেষ ধাপ। গত বুধবার মীর কাসেমের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। একাত্তরের বদর নেতা কাসেমের ফাঁসি কখন কার্যকর হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দেননি। তবে দুপুরের পর থেকে কাশিমপুর কারাগার কমপ্লেক্সের বাইরের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি কারাগারের ফটকে সারি বেঁধে অবস্থান নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে কারাগারে ঢুকেছে ফায়ার সার্ভিসের একটা গাড়ি। পুলিশের একটি জলকামান আগের রাতেই কারাগারের ভেতরে নিয়ে রাখা হয়েছিল। কারাগারের আরপি চেকপোস্ট সংলগ্ন দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। উৎসুক জনতা ভিড় করেছে কারা ফটকে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীও সেখানে উপস্থিত আছেন।ফাঁসি কার্যকরের সময় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল কেবল বলেন, দেখেন, অপেক্ষা করেন। শেষবার দেখা করতে ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কারাগারে যান মীর কাসেমের স্বজনরা। শেষবার দেখা করতে ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কারাগারে যান মীর কাসেমের স্বজনরা।জামায়াতের মজলিসে শুরা সদস্য মীর কাসেমের সঙ্গে শেষবার দেখা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষের ডাক পেয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কাসিমপুরে পৌঁছান তার পরিবারের সদস্যসহ ৪৫ জন আত্মীয়।
তাদের মধ্েয মীর কাসেমের স্ত্রী, মেয়ে, পুত্রবধূসহ ৩৮ জনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে বলে জেলার নাশির আহমেদ জানিয়েছেন।এর আগে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরিবারের শেষ সাক্ষাতের দিনই তাদের ফাঁসি কার্যকর করেছে কর্তৃপক্ষ। জামায়াতের মজলিসে শুরা সদস্য মীর কাসেমকে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৪ সালে মৃত্যুদন্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছর মার্চে আপিল বিভাগেও সেই রায় বহাল থাকায় তিনি রিভিউ আবেদন করেন।আপিল বিভাগ গত মঙ্গলবার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে কাসেমের মামলার সব বিচারিক প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি ঘটে।মীর কাসেমের প্রাণ বাঁচানোর শেষ সুযোগ ছিল কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া। তিনি সেই সুযোগ নেবেন না বলে শুক্রবার জানিয়ে দিলে শুরু হয় সরকারের নির্বাহী আদেশের অপেক্ষা। জেলার নাশির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলীকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ৪০ নম্বর কনডেম সেলে। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হচ্ছে। কারাগারের এক কর্মকর্তা শুক্রবারই জানিয়েছিলেন, ফাঁসির দন্ড কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি তারা নিয়েছেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের দক্ষিণ পূর্ব কোণে ফাঁসির মঞ্চটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মোম মাখানো দড়িতে আনুমানিক ওজনের বালির বস্তা বেঁধে প্রাথমিক মহড়াও দেওয়া হয়েছে। জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে চারজন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান। এই জল্লাদ দল এর আগে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করেছিল।
Discussion about this post