যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের পর তার লাশ মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চালা গ্রামে দাফন করা হবে। প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এজন্য সড়ক পথে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। র্যাব-৪ এর এএসপি উনু মং শনিবার সন্ধ্যায় জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত ঠিকঠাক থাকলে মীর কাসেমের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের চালা গ্রামে তাকে দাফন করা হবে। আহমাদিয়া সুলতানিয়া সামসুল উলুম হাফেজিয়া ও এতিমখানা মাদ্রাসার হুজুর হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদেরকে মীর কাসেম আলীর নামাজে জানাজা পড়ানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কবর খোঁড়ার কাজ করছেন চালা ইউনিয়নের সাকুচিয়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে সামেজ উদ্দিন বিশ্বাস (৭০)। জানা গেছে, মীর কাসেম আলীর নির্মিত মসজিদ সংলগ্ন লেবু বাগানের পাশে তার কবর খোঁড়ার প্রস্তুতি চলছে। যে স্থানে তাকে দাফন করা হবে তার আশপাশের মানুষের আনাগোনাও সীমিত করা হয়েছে।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, সব কিছু প্রস্তুত রাখা আছে। মীর কাসেম আলীর লাশ দাফনে যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা না হয় সেজন্য ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিন শতাধিকেরও বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকছে মীর কাসেম আলীর গ্রামের বাড়ি ঘিরে। গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা না জানানো হলেও প্রস্তুতির ধরন দেখে মনে হচ্ছে শনিবার রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।
শেষ খবর অনুযায়ী কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করেছে। অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে প্রবেশ করেছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন উর রশীদ। তিনি সাংবাদিকদের জানান, কারাগার ও এর আশেপাশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকরের সময় বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। উল্লেখ্য, আজ শনিবার সন্ধ্যায় মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকরের নির্বাহী আদেশ কাশিমপুর কারাগারে এসে পৌঁছায়। এর আগেই পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের মধ্যে ৩৮ জন মীর কাসেমের সঙ্গে কারাগারের ভেতরে এসে সাক্ষাৎ করেন। ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আলবদর নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ আটজনকে হত্যার দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগের রায়েও তার এ শাস্তি বহাল থাকে। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেওয়া হলেও গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তিনি প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না এটা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপরই তার ফাঁসি কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post