মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী বিচারকার্যের সময় আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অনেক করেছেন বলে মন্তব্য গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের।শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।এতে বক্তব্যে ইমরান বলেন, দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তারপরই এসেছে রায়। এই বিচারকার্যের সময় আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলেন। তবে আমরা সোচ্চার ছিলাম। ফাঁসি হচ্ছে এতে জনগণের বিজয় হয়েছে বলেও মত দেন তিনি।এর আগে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃতুদন্ড কার্যকরের প্রস্তুতির মধ্যে শাহবাগে অবস্থান নেয় যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনরত গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর, যুদ্ধাপরাধের বিচার দ্রুত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন জাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।সম্ভাব্য দ্রুতততম সময়ে মীর কাসেমের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, রায় কার্যকর যতো দীর্ঘায়িত হচ্ছে ততোই তারা নানা ধরনের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বিশ্বব্যাপী।
তারা লবিং-তবদির করে মীর কাসেমের রায় কার্যকর বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এ কারণেই কালক্ষেপণ না করে যতো শিগগির সম্ভব এই রায় কার্যকর করা হোক।মীর কাসেমের দন্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে একটা যুগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ইমরান।তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে একটা যুগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে, যে যুগটি ছিল সেই যুদ্ধাপরাধী যারা একদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে অপরদিকে স্বাধীনতার পরে তারাই আবার এই যুদ্ধাপরাধী সংগঠন নতুনভাবে সংগঠিত করেছিল এই বাংলাদেশে। সেই যুদ্ধাপরাধীদের যুগের কিন্তু অবসান হতে যাচ্ছে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর রায় কার্যকরের মধ্য দিয়েই।একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের চট্টগ্রাম শহর কমিটির সভাপতি ছিলেন মীর কাসেম আলী। সে সময় চট্টগ্রামে আল-বদর বাহিনীর নেতৃত্ব দেন তিনি।স্বাধীনতার পর জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশে ফিরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয় যুদ্ধাপরাধীরা।এ সময় জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে ফেরার পর তাদের ছাত্র সংগঠন নাম বদলে হয় ইসলামী ছাত্র শিবির, যার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মীর কাসেম।
তার রায় কার্যকরে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা সহজ হবে বলেও মনে করছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র।এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, মীর কাসেমের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে একদিকে একটি যুগের অবসান হয়েছে। আরেক দিকে মীর কাসেম আলী যেহেতু জামায়াতে ইসলামীর প্রধান অর্থ যোগানদাতা ছিল, তাই তার ফাঁসির মধ্য দিয়ে জামায়াত একটি নতুন সংকটে পড়বে, অর্থের যোগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।আমরা মনে করছি, এতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা সহজ হয়ে যাবে।মীর কাসেমের দন্ড কার্যকরের পর জামায়াত নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
Discussion about this post