মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্দেশিকা এবং মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা নয় মুক্তিযোদ্ধার করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সামবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশিকা ও কমিটি গঠন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০০-এর বিধানপরিপন্থী উল্লেখ করে চলতি মাসে রফিকুল আলম, নাজিমউদ্দিন, আজিজুর রহমানসহ নয় মুক্তিযোদ্ধা রিটটি করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
পরে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, আইন অনুসারে গেজেট প্রকাশ করার আগে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এরপর গেজেটের মাধ্যমে তা প্রকাশ করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। গেজেট অনুসারে অ-মুক্তিযোদ্ধা হলে যথাযথ তদন্ত করে তাঁর নাম বাদ দেওয়াসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু এভাবে যাচাই-বাছাই করা যাবে তার কোনো বিধান আইনে নেই। অথচ সব মুক্তিযোদ্ধার যাচাই-বাছাই করার জন্য নির্দেশিকা ও কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনবিরোধী।হাসনাত কাইয়ুম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১২ জানুয়ারি এক গেজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাইয়ের জন্য মহানগর ও জেলা, উপজেলায় কমিটি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই বাছাইয়ের বিষয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল গত বছরের ১০ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি করে। পরে গত ৫ জানুয়ারি আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাছাইয়ের তারিখ পরিবর্তন করা হয়।এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল আলমসহ নয়জন মুক্তিযোদ্ধা এই রিট আবেদন করেন।তারা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশের সময় ওই গেজেটকে চূড়ান্ত তালিকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক সেই গেজেট বাতিলের ক্ষমতা আইন অনুযায়ী প্রয়োগ করা যায়।হাসনাত কাইয়ুম বলেন, গেজেটভুক্ত সকল মুক্তিযোদ্ধাকে পুনরায় যাচাই বাছাই করার ক্ষমতা আইন অনুযায়ী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নেই। এ কারণে অন্য কাউকে দিয়ে কমিটি করার বিধানও প্রণয়ন করা হয় নাই।”
Discussion about this post